ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা ১১ দিন ভয়াবহ হামলা চালানোর পর অবশেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর ফিলিস্তিনের সর্বত্র বিজয় মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাত ২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পরপরই গাজা, পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নানা স্লোগান নেন। আতশবাজিতে আলোকিত হয়ে ওঠে আকাশ। ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, ঈদের খুতবা দিয়ে হামাস নেতারা বিজয় ভাষণ শুরু করেন। এসময় মঞ্চের সামনের দাঁড়িয়ে থাকা জনতাকে ঈদের তাকবির দিতে শোনা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকা হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা খলিল আল-হাইয়া তার ভাষণের শুরুতেই তাকবির দেন। ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ’। এরপর সমাবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের বিজয়ের ঈদ। হে রব, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, আপনি আমাদের শত্রুদের পরাজিত করে আমাদের জনগণকে বিজয় দিয়েছেন। আল কুদসকে বিজয়ী করেছেন, শেখ জাররাহকে বিজয়ী করেছেন, সকল স্থানের জনগণকে বিজয় দান করেছেন।’
গত ১০ মে থেকে গাজায় বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েল। এতে ২৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬৫টি শিশু রয়েছে। এছাড়া হামাসের রকেটে ১২ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা ও হামাসের রকেট হামলা বন্ধে শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর চাপ বাড়ে। সামরিক অভিযান বন্ধে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও হামাস নেতাদের চাপ দিতে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিসর, কাতার ও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। এদিকে, গাজায় হামলা বন্ধের পাশাপাশি আল-আকসা মসজিদ ও শেখ জাররাহ এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার যে প্রতিশ্রুতি ইসরায়েল দিয়েছে তা যতক্ষণ পর্যন্ত মেনে চলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত হামাসও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করবে বলে শর্ত দিয়েছে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধানের গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা তাহের আল-নুনু।