সিভাসু : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।সারা বিশ্বের মতো ‘ নো ওয়ার্ক, নো স্কুল ‘কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার তারা এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত কর্মসূচিসমূহে সিভাসুর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলি ও আমেরিকান পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ ও বয়কটের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করে।
সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি: ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস বায়েজিদ আরেফিন নগরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ইউনিভার্সিটি কতৃর্পক্ষ। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক প্রকৌশলী ড. মোজাম্মেল হক, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান, রেজিস্ট্রার এ এফ এম মোদাচ্ছের আলী, অধ্যাপক ড. শওকতুল মেহের, অধ্যাপক আশুতোষ নাথ, সকল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকতার্, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীবৃন্দ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজাবাসীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে গতকাল সোমবার সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
হাটহাজারী প্রতিনিধি : কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর আল্লামা মুফতি জসিম উদ্দিন বলেন, মজলুম ফিলিস্তিনিদের রক্ত কোনোভাবেই বৃথা যাবে না। বরং শহীদদের রক্তের পথ ধরেই বিজয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে হাজার হাজার নিরাপরাধ গাজাবাসীকে হত্যা করেছে। মূলত ইসরায়েলি বর্বরতা হালাকু খানের বাগদাদ ধ্বংসের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে। গাজায় তাদের হামলা রীতিমতো যুদ্ধাপরাধের শামিল। বর্বর হামলার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে একদিন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। তিনি অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। অন্যথায় বিশ্বমুসলিম ঘরে বসে তামাশা দেখবে না। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ বলেন, মূলত স্বাধীন–সার্বভৌম ফিলিস্তিনই মধ্যপ্রাচ্য সংকটের অদ্বিতীয় সমাধান। তাই মুসলিম উম্মাহ স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষেই রয়েছে। কিন্তু ইহুদিবাদী দখলদাররা ভূমিপুত্রদের সেখান থেকে উৎখাত করার জন্য নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের জিঘাংসা ও প্রতিহিংসা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নিরাপরাধ নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও। এমনকি জায়নবাদী বর্বরতার শিকার হচ্ছে মসজিদ, গির্জা, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সর্বোপরি তারা রাফায় হামলার হুমকি দিয়ে পুরো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। তাই ইহুদীবাদীদের এই নির্মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।হাটহাজারী উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক মোরশেদ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহর যৌথ সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, আব্দুর রহমান চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম মেহেদী, মাহমুদ হোসাইন, নূর মুহাম্মদ,মাওলানা নিজাম সাইয়্যিদ, হাফেজ আব্দুল মাবুদ, মীর লোকমান আলী, মোহাম্মদ শফিউল আলম, ওজাইর আহমদ হামিদী, মিজান ইবনে আলী, হাফেজ মহিউদ্দিন, হাফেজ শফিউল বশর, আবু তাহের রাজিব, জিয়াউল হক, এইচ এম শহিদ, আমিনুল ইসলাম, তাওহিদুল ইসলাম, ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।
বান্দরবান প্রতিনিধি : ফিলিস্তিনে চলমান নির্মম গণহত্যা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদে বান্দরবানে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে ছাত্র–জনতা। আলআকসা রক্ষায় অবিলম্বে হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল সোমবার বান্দরবান জেলা শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। ব্যানার ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ ‘গণহত্যা বন্ধ কর’, ‘আলআকসা আমাদের গর্ব’ স্লোগানে কয়েকশ ছাত্র–জনতা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। পরে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বান্দরবান পৌরসভার প্রশাসক এস. এম. মঞ্জুরুল হক, পার্বত্য ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল, ছাত্রনেতা শিফাত প্রমুখ। সমাবেশে বান্দরবান পৌরসভার প্রশাসক এস.এম. মঞ্জুরুল হক বলেন, ফিলিস্তিন মুসলমানদের প্রাণের স্পন্দন আলআকসা মসজিদ আজ আগ্রাসনের মুখে। ইসলামের প্রথম কিবলা ও ইতিহাস–ঐতিহ্যে ভরপুর পবিত্র এই স্থানকে ঘিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা ও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নির্বিচার হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ। অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর হস্তক্ষেপের দাবি জানান তারা।এই অমানবিক গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া করার দাবি জানান তারা।
রাঙ্গুনিয়া ইসলামী ফ্রন্ট : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠন এসব কর্মসূচি পালন করে। বিকালে ইসলামী ফ্রন্ট রাঙ্গুনিয়া উপজেলার আয়োজনে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী আগ্রাসন ও ভারতে মুসলিম ওয়াকফ আইন–১৯২৩ বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গুনিয়া থানার সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি থানা সদর থেকে শুরু করে কাপ্তাই সড়কের ইছাখালী এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ইসলামী ফ্রন্ট সভাপতি মুহাম্মদ করিম উদ্দীন হাছান। রবিউল মোস্তফা রাফির সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজম খান, সৈয়দ মুহাম্মদ ওবাইদুল মোস্তফা নঈমী, অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন তৈয়্যবী, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মারফতুন্নুর, আকতার হোসেন, হাফেজ আব্দুর রহমান জামী, মুহাম্মদ করিম উদ্দীন নূরী, মাহমুদুর রশীদ মাসুদ, এইচ এম শহীদুল্লাহ্, খায়রুল আমিন চিশতি, আরিফুর রহমান, হাফেজ মুহাম্মদ তারেক হোসাইন, শাহে এমরান রণি, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ ইসরাইলী সকল পণ্য বয়কটসহ মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়োজনে সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।
বরমায় সমাবেশ ও মানববন্ধন : ফিলিস্তিনে ইসরাইলের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গতকাল সোমবার সকালে বরমায় এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদরাসার শিক্ষক–শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনগণ অংশ নেন। বরমা কলেজ, মাদরাসা ও স্কুলের সংযোগস্থলস্থ বরমা এডুকেশন স্কয়ারে সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বরমা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক আবু তাহের, অধ্যাপক জসীম উদ্দীন চৌধুরী, অধ্যাপক আনিছুল মালেক, অধ্যাপক মুজিবুল হক চৌধুরী, অধ্যাপিকা সালমা আহসান, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক মোহাম্মদ মোরশেদ, অধ্যাপক দেবানন্দ বসু, অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, অধ্যাপক শাকিল আহমদ, কাজী আহমদ হোসাইন, ওসমান গনি, জয়নাল আবেদীন। বক্তারা ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যাকান্ড বন্ধ এবং গাজাবাসীদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহবান জানান।
ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভুলুশন : ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভ্যুলেশন চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা রেজাউল কাওসার। বক্তব্য রাখেন সাবিনা সায়াদাত সাফা, খোরশেদ আলম, আজিজ মাবরুর, নিজাম উদ্দীন, নাফিজ মোবারক, আব্দুল বারেক, আব্দুল আজিজ, লোকমান হোসেন লাবলু, গিয়াস উদ্দীন, নজিবুল কবির রাহগীর, রেজাউল করিম, হোসনে আরা বেগম, তাছলিমা আক্তার আরজু, সুমি আক্তার, আরিফুল হক প্রমুখ। বক্তাগণ ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করতে বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।