ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। গত বুধবার তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধান খুঁজতে জুন মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে এই স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এটি এক সঠিক পদক্ষেপ। গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের মধ্যেই মেক্সিকো, আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামা, ট্রিনিডাড অ্যান্ড টোবাগো, জ্যামাইকা ও বারবাডোস–এই ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাড়তে থাকা সমর্থনেরই প্রতিফলন। খবর বাংলানিউজের।
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা বিশ্বের প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়া ক্যাথলিক চার্চ ও ভ্যাটিকান সিটির শাসনকারী কর্তৃপক্ষ হোলি সি–ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যারা জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক সদস্য হিসেবে রয়েছে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নিজ ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব হারান ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চার দশক পর ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন। রাজধানী ঘোষণা করা হয় পবিত্র জেরুজালেমকে। এই ঘোষণার পরপরই ৮০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্যে ছিল বেশ কয়েকটি আরব দেশ, পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ। ইউরোপের যে কটি দেশ সে সময় স্বীকৃতি দেয়, সেগুলো তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
১৯৯০ দশকের শুরু থেকে ২০১০ সালের মধ্যে আরও ৩২টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্যে ছিল চীন, রাশিয়া ও তুরস্কের মতো অর্থনৈতিক পরাশক্তি। ২০১১ সালে ইরিত্রিয়া ও ক্যামেরুন ছাড়া আফ্রিকার প্রায় সব দেশই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। ২০১২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত এক ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় (১৩৮টি দেশ) ফিলিস্তিনকে ‘পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এতে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়।