ফটিকছড়িতে অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে শতাধিক গ্রাম বর্তমানে পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। হালদা নদী এবং ধুরুং খালের পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গহিরা–হেয়াকো সড়কের পাইন্দং, নারায়ণহাট, নাজিরহাট–কাজিরহাট সড়কের সুয়াবিল এলাকার, কাটিরহাট–সমিতিরহাট ও নানুপুর সমিতির হাটের সংযোগ সড়কসহ কয়েকটি স্থান কোমর সমান পানিতে তলিয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২০ আগস্ট থেকে এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে উপজেলা নাজিরহাট পৌরসভার হালদার বাঁধ। এ এলাকার মালেকার পাড়া এলাকায় বাঁধ প্রায় ভেঙে গেছে। যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে প্রায় ১৫০ বসতঘর।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, অতিভারী বৃষ্টির কারণে ফটিকছড়ির বিভিন্ন স্থানে খালগুলো উপচে লোকালয়ে প্লাবিত হচ্ছে। ধুরং খাল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুসারে আরো বাড়ানো হবে। এছাড়াও ফটিকছড়ি উপজেলা বন্যা, জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধস পরিস্থিতির জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। পাইন্দং–কাজিরহাট বন্যার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাওয়া রেডক্রিসেন্ট টিমের মো. সালমান জানান, পাইন্দং ফকিরাচান থেকে কাজিরহাট পর্যন্ত বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে। সড়কের পাশে পরিদর্শন করা গেলেও ভিতরে শত শত বাড়িঘর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ওই এলাকাগুলোতে যাওয়ারও সুযোগ নেই। বন্যা কবলিত এসব এলাকায় কেউ কাউকে সহযোগিতা করার দৃশ্যও চোখে পড়েনি।
খাগড়াছড়ি : দীঘিনালার বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত। পানিতে ডুবে আছে মেরুং ও কবাখালি ইউনিয়নের ৩০ গ্রাম। এদিকে পাহাড়ি ঢলে দীঘিনালা–লংগদু সড়কের হেড কোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ার রাঙামাটির লংগদুর সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ডুবে গেছে মেরুং বাজার।
মেরুং ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ঘনশ্যাম ত্রিপুরা বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে আসা বন্যা দুর্গতদের শুকনো খাবার ও খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো হয়েছে। মাইনী নদীর পানি না কমায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এখনো মেরুং বাজার পানির নিচে। পানির নিচে ইউনিয়নের ৩০ গ্রাম।
এদিকে মহালছড়ি–জালিয়াপাড়া সড়কের একাধিক অংশে মাটি ধসে যান চলাচল বিঘ্ন করে হয়। এছাড়া সড়কের একাধিক অংশ দেবে গেছে। পরে মাটি সরিয়ে যান চলাচল উপযোগী করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, সড়কটির একাধিক অংশ মাটি ধসে পড়েছে। আমাদের টিম করেছে। আপাতত ছোট যানচলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার গভীর রাতে বন্যা দুর্গতদের গরম খাবার বিতরণ করছে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। মধ্যরাতে খিচুড়িসহ গরম খাবার পেয়ে স্বস্তি পায় বন্যাদুর্গতরা।