ফটিকছড়িতে খাল খননে বদলে যাবে বক্তপুরের চিত্র

দুই পাড়ে হচ্ছে হাঁটার রাস্তা

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি | শনিবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ভরাট হয়ে নালায় পরিণত হয়েছিল ফটিকছড়ির তেলপাড়ই সংযোগ খালটি। পাড়ে গাছগাছালি ও লতাপাতায় হাঁটা যেত না। অনেক স্থানে জোয়ারভাটার পানি আসাযাওয়া ছিল বন্ধ। এতে খালের পাশে আবাদি অনেক জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে অন্যদিকে বছরে শুধু এক মৌসুমে চাষ করা যেত পানির অভাবে। কিন্তু সেই চিত্র এখন বদলে যাচ্ছে। খালটি খননের মাধ্যমে প্রশস্ত করা হচ্ছে। দুই পাড়ে মাটি দিয়ে বাঁধাই করে তৈরি করা হচ্ছে হাঁটার রাস্তা। সহজে জোয়ারভাটার পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ফটিকছড়ি উপজেলা বক্তপুর ইউপিতে দেড় কিলোমিটার খাল খননে এই চিত্র বদলে দিয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তরের উর্বর জমি সমৃদ্ধ জনপদের নাম ফটিকছড়ি উপজেলা। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৮ কিমি. দূরত্বে ফটিকছড়ি উপজেলার অবস্থান। উপজেলার বিভিন্ন ফসলাদি উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু বক্তপুর ইউনিয়নে শুকনো মৌসুমে পানির আধার হ্রাস পাওয়ায় আউশ ও বোরো ফসলসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ফলে প্রতিবছর শত শত একর ফসলি জমি অনাবাদিসহ কৃষকরা সেচ দিতে না পারায় ফসল উৎপাদনে বড় ধরনের মার খাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: হাসানুজ্জামান জানায়, অত্র অঞ্চলের খালের নাব্য সংকটের ফলে পানি সেচ ব্যবস্থাপনায় কৃষকরা তাদের আবাদি ফসল উৎপাদনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ধরে রাখতে পারছেন না। খাল খনন সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে মোট জমির ১ হাজার হেক্টর বোরোসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হবে। একই সঙ্গে খালের প্রবাহিত পানির সঙ্গে পলি এসে জমির উর্বরতা বৃদ্ধিসহ সেচ কাজে আসবে গতিশীলতা এবং বাঁচবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার।

জানা যায়প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার ফটিকছড়ির তেলপাড়ই সংযোগ খালটি। এটি আগে ভরাট হয়ে যাওয়াতে পানি চলাচল হতোনা অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে এ এলাকার দেড় হাজার একর জমিতে চাষাবাদে সমস্যা দেখা দিতো। প্রথম পর্যায়ে খালটি দেড় কিলোমিটার খননের মাধ্যনে সংষ্কার করা হচ্ছে। খালটি সংষ্কারের মাধ্যমে বক্তপুরের ৫, , , ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের প্রায় ১০হাজার মানুষ উপকৃত হবে।

স্থানীয় নাগরিক ও উপকারভোগী মো: রোকনুজ্জামান জানান, গ্রামীণ জনপদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভরাট খালগুলো উদ্ধার করে খনন ও পুনঃখনন করা হলে একদিকে যেমন খালের নাব্যতা ফিরে আসবে, তেমনি ফসলের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন বাড়বে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বক্তপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: ফারুক উল আজম জানান, বড় খালটি অনেক দূরে হওয়ায় জোয়ারভাটার পানি চলাচল হতো না এই খাল দিয়ে। এতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে খালের দুই পাশে শত শত একর জমি আনাবাদি থেকে যেত এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা যেত না। বছরে এক সিজন চাষ করা যেত শুধু। এই খালটি খননের মাধ্যমে পাল্টে গেছে পুরো গ্রামের চিত্র। তবে যে কাজটি হচ্ছে এরপর যদি বাকি ৩কিলোমিটার কাজ করা যায় তাহলে বক্তপুরে আর কোন সমস্যা হবেনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীর গড়দুয়ারায় বিএনপির লিফলেট বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধহেলদি সিটি গড়ে তুলতে সকল ধর্মের সহাবস্থান ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন