রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর ফাঁসি ও তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে নগরীর কোর্ট হিলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকালে কোর্ট হিলের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘বৈষম্যবিরোধী সাধারণ ছাত্র ও চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণের’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করে ভার্চুয়ালি শুনানির প্রতিবাদ জানানো হয়। ভার্চুয়াল শুনানি করে দেওয়া আদেশ বাতিলেরও দাবি জানানো হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০ টা থেকে নানা বয়সী ছাত্র–জনতা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোক সংখ্যাও বাড়তে থাকে। জড়ো হওয়াদের মধ্যে অনেকের হাতে ‘ফজলে করিম রাজাকার, কেড়ে নিল অধিকার, রাউজান ছিল কারাগার, ছিল না কোন অধিকার’ লেখা নানা রকম প্ল্যাকার্ড ছিল।
বিক্ষোভ সমাবেশে অনেকে বক্তব্যও রাখেন। বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী রাউজানকে নরকে পরিণত করেছিলেন। তার কথার বাইরে কেউ টু শব্দ করতে পারেননি। প্রতিবাদ করলে ‘মিথ্যা’ মামলা ও নির্যাতন করতেন। বক্তারা বলেন, ফজলে করিম চৌধুরীর হাতে রাউজানবাসী নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হলেও তিনি কারাগারে থেকে নানা সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। সারাদেশের কোথাও নজির চোখে না পড়লেও চট্টগ্রামে ভার্চুয়ালি শুনানি করে তাকে আদালতের কার্যক্রমে হাজির করা হচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। ভার্চুয়ালি শুনানি করে ফজলে করিমকে হাজির করে যেসব আদেশ দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাতিল করতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীও স্বৈরাচারের দোসর। বাবার অস্ত্রভান্ডারের রক্ষক ছিলেন তিনি। এ জন্য তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্তের আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। আদালতের মাধ্যমে তখন তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে হেলিকপ্টারে করে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয়। নগরী ও রাউজানে দায়ের হওয়া পাঁচটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। একটি মামলায় তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। সেদিন আদালত চত্বরে ছাত্র–জনতা জড়ো হয়ে তার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। তাকে বহনকারী প্রিজনভ্যান লক্ষ করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নগর ও জেলায় ১৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। হত্যাসহ নানা অভিযোগে এসব মামলা দায়ের হয়।