বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যদি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে বিএনপি খুশি হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন সভায় বলেছিল আইন করতে সময় লাগে না, দুদিনেই আইন করা যায়। সরকার যখন আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে তখন তারা এর বিরোধিতা করছেন। আসলে বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। নির্বাচন কমিশন গঠন আইন নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে বিএনপিও একটি কথা বলেছিল, তারা রাষ্ট্রপতির সংলাপে যায়নি কিন্তু বিভিন্ন সভায় তারা বলেছিল আইন করতে সময় লাগে না, দুদিনেই আইন করা যায়। দেশে প্রয়োজনের নিরিখে অতীতে অনেক কিছু হয়েছে। এটিও রাষ্ট্রের প্রয়োজন, তাই সহসা আইন করা প্রয়োজন। আজকে যখন আইন করার উদ্যোগ নিয়েছেন তখন তারা এর বিরোধিতা করছেন।
তিনি বলেন, এ আইন কিন্তু এখনও হয়নি এটি একটি প্রস্তাবনা। সংসদের হাউজে উঠেছে, হাউজ থেকে কমিটিতে গেছে। একটু আগে সংসদীয় কমিটির মিটিং হয়েছে, সেখানে বিএনপির প্রতিনিধিরাও ছিলেন। আমি তাদের বক্তব্য টিভিতে শুনছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আলোচনা হয়েছে। মিটিং থেকে বেরিয়ে আইনমন্ত্রী ব্রিফ করেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকেও ব্রিফ করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানও ব্রিফ করেছেন। সেখানে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছেন। সেগুলো গ্রহণ করেছেন বলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন। অতএব পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আইনটি করা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে বিএনপি চায় বাংলাদেশে একটি ঘোলাটে পরিবেশ তৈরি হোক। বিএনপি কোনো কিছুতেই খুশি হবে না। তিন মাস সময় নিয়ে যদি আইন করা হয় তাতেও বিএনপি খুশি হবে না। তখনই বিএনপি খুশি হবে যদি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সম্ভবত তখন তারা খুশি হবে। এছাড়া খুশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। যদিও ৫০ বছরে সেটি হয়নি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন। বেশির ভাগ রাজনৈতিক সংগঠনই সংবিধান অনুযায়ী একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের গঠনের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের তাগাদা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি আইনের একটি রূপ রেখা তারা দিয়েছেন। তখন আইনমন্ত্রী বলেছিলেন এখন আইন করতে গেলে তারাহুরো হবে। তখন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন রাষ্ট্রপতির অর্ডিনেন্সের মাধ্যমে আইনটি করা হোক। যারা এ কথা বলেছিলেন আইনমন্ত্রীকে তারা এখন আবার গত রোববার জুম মিটিং করে বলেছেন তাড়াহুড়ো করে আইন করা সমীচীন হচ্ছে না।
তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ করে আইন করার কথা বলেছিলেন আবার কেউ কেউ বলেছিলেন দুই একদিনেই আইন করা যায়। যখন সরকার একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে তখন তারা আবার নিজেরা যে অবস্থানে ছিলেন, দাবি দিয়েছিলেন তার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। তাহলে তাদের উদ্দেশ্যটা কী। তাদের উদ্দেশ্য আসলে সৎ উদ্দেশ্য নয়। এ সমস্ত কথাবার্তা বলে তারা আসলে রাজনৈতিক ক্রিয়ানক হিসেবে কাজ করছেন।
সুশীল সমাজের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাড়াতাড়ি আইন করার তাগাদা দিয়েছিলেন, এমনকি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন করার কথা বলেছিলেন। সরকার যখন এ আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন তারা অন্য কথা বলছেন। আসলে তাদের উদ্দেশ্য মহৎ নয়, এটিই প্রমাণিত হয়। তারা আসলে পানি ঘোলা করতে চায়।