ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার যে হয়েছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তারা চেষ্টা করবেন ‘বিধি’ তৈরি করে অপব্যবহারের পথ বন্ধ করতে, তাতে না হলে প্রয়োজনে সংশোধনের কথা ভাববেন।
প্রথম আলোর সাংবাদিককে গ্রেপ্তার এবং র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রদ করার দাবি যখন নতুন করে জোরালো হয়ে উঠেছে, সেই সময় আইনমন্ত্রীর এমন ভাষ্য এল। গতকাল মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে উপস্থিত হয়েছিলেন আইনমন্ত্রী। সেমিনারের বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার’। সেমিনার শেষে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। খবর বিডিনিউজের।
উত্তরে তিনি বলেন, তিন দিন আগের সাংবাদিক আটকের ওই ঘটনায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে নতুন করে ভাবনার প্রশ্ন উঠে না। আমি আগেও যা বলেছি, এখনও বলছি যে, আইনের কিছু মিসইউজ ও অ্যাবিউজ হয়েছিল, আমি যেটাকে বলব অপব্যবহার হয়েছিল। সেটাকে আমি স্বীকার করে এটার কী পরিবর্তন আনা যায়; সেজন্য আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিসের সঙ্গে আলোচনারত। এখনো সে আলোচনা চলছে। সেখান থেকে একটি টেকনিক্যাল নোট এসেছে। সেটা আমরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছি।
আইনমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ মার্চ সুধী সমাজের সঙ্গে বসেছিলাম, তাদের কথা শুনেছি। তারা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন, ডেটা প্রটেকশন আইন ও এনজিওদের ভলান্টারি ফান্ড নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার কথাও আছে। মধ্য এপ্রিলে সেই আলোচনাটি আবার হবে। ওই আলোচনা হওয়ার পর ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপব্যহারের বিষয়গুলো সংশোধন যদি বিধি দ্বারা সম্ভব হয় তাহলে তা করব, নইলে যদি আইনের সংশোধনের প্রয়োজন হয় তাহলে সংশোধন করা হবে।
আরবিট্রেশন আইনের সংস্কার : ডিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল আরবিট্রেশন আইনের। বক্তারা সেখানে আইনি সংস্কারের পক্ষে যুক্ত তুলে ধরেন বলে ডিসিসিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, একটি কার্যকর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম পূর্বশর্ত। গত কয়েক দশকে আমাদের বৈদেশিক বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বাণিজ্য বিরোধের পরিমাণ, ফলে সামপ্রতিক সময়ে এ ধরনের বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে আরবিট্রেশন একটি অন্যতম নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।