প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ১৩ আ. লীগ নেতা, আছেন এক ব্যবসায়ীও

উপজেলা নির্বাচন : বাঁশখালী

| শনিবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তবে কখন নির্বাচন হবে সেটা এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট না করলেও আসন্ন রমজান পরবর্তী কয়েক ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে সব উপজেলা পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে সে সব উপজেলাতে প্রথম ধাপে নির্বাচন হতে পারে বলে সূত্রে জানা যায়। সেই হিসেবে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে পারে বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এবার নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ড. মোহাম্মদ জমির উদ্দিন সিকদার, সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী, বর্তমান উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজমী, ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশিদ, শীলকূপের সাবেক চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা মোজাম্মেল হক সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি যুবলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ামুন নাহার, ইমরানুল হক ইমরান, যুবলীগ নেতা শাহাদাত রশিদ চৌধুরী, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইলিয়াস, দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগ নেতা শুভাশীষ রায় শিমুল ও বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শিহাব উল হক সিকদার। এছাড়া সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ামুন নাহার ও মো. ইমরানুল হক ইমরান চেয়ারম্যান পদে বা পূর্বের মত ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সাধারণ জনগণ শুরু থেকে নানাভাবে আমাকে নিয়ে আগ্রহ ও মতামত দিচ্ছে। তবে দলীয় মনোনয়ন ফেলে নির্বাচনে অংশ নেব।

বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম বলেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরেছি। আশা রাখি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দল আমাকে মনোনয়ন দিবে এবং অতীতের মত জনগণকে সাথে নিয়ে দলের জন্য কাজ করতে পারব।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ড. মোহাম্মদ জমির উদ্দিন সিকদার বলেন, দলের জন্য এবং এলাকার জনগণের জন্য সৃজনশীল কাজ করাই আমার লক্ষ্য। এক্ষেত্রে দল যদি আমাকে মনোনয়ন প্রদান করে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে সাধারণ জনগণ এবং দলের জন্য কাজ করার সুযোগ পাব।

ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা এম হারুনুর রশিদ বলেন, দীর্ঘদিন এলাকার জনগণের জন্য কাজ করছি। তাই সাধারণ জনগণ ও বর্তমান এমপির সমর্থন ও দলীয় মনোনয়ন পেলে অবশ্যই জয়ের আশা মাথায় রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।

উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও শীলকূপের সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সিকদার বলেন, দীর্ঘসময় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সাধারণ জনগণের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। জনগণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে বিজয়ী করলে আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করার সুযোগ পাব।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে উন্নয়ন ও সমাজসেবা মূলক কাজ করা আমার নেশা। যদি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে পারি তাহলে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে আরো বিশাল পরিসরে কাজ করার সুযোগ পাব।

বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শিহাব উল হক সিকদার বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হওয়ায় আঞ্চলিকতার প্রভাব থাকে। দীর্ঘদিন বাঁশখালীতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে মাঠ পর্যায়ে রাজনীতি করার সুবাদে নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারব বলে আমি আশাবাদী।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে উপজেলা নির্বাচনেও বাঁশখালীতে ১১৪টি ভোটকেন্দ্রে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৫ জন ভোটার থাকবে। উপজেলা নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না বলে আশা রাখি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারো জাতীয় পার্টি নেতা সুজিত কান্তি সিকদার, ২০০৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির ব্যানারে আলমগীর কবির চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তিনি ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে উপজেলা জামায়াত আমীর মাওলানা জহিরুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। মামলার কারণে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বদরুল হক ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম সুলতান উল কবির চৌধুরীর পুত্র চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী আওয়ামী লীগের ব্যানারে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে জাতীয় সংসদের সদস্য পদে প্রার্থী হতে পদত্যাগ করেন। ফলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা আক্তার কাজমী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধজহুর হকার্স মার্কেটে দোকানে আগুন