প্রাবন্ধিক সাখাওয়াত হোসেন মজনু আর নেই

হাসান আকবর | শনিবার , ১ মে, ২০২১ at ১:১৬ অপরাহ্ণ

দৈনিক আজাদীর নিয়মিত কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, গবেষক সাখাওয়াত হোসেন মজনু আজ ১ মে শনিবার সকাল ৮টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে …. রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
তিনি স্ত্রী কবি-শিক্ষক মর্জিনা আখতার, ভাই-বোনসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন রেখে যান।
আজ বাদ জোহর নগরীর লালখান বাজার বাঘঘোনা মোড়ে নামাজে জানাজা শেষে গরীবুল্লাহ শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সাখাওয়াত হোসেন মজনু দেশের বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক হিসেবে যেমন পরিচিত, তেমনি নিষ্ঠাবান গবেষক হিসেবেও সমাদৃত। ১৯৫৭ সালের ২০ এপ্রিল তাঁর জন্ম। বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে নিয়েছিলেন এমএ ডিগ্রি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক দেশবাংলার একজন কিশোর কর্মী হিসেবে ছোট ছোট সংবাদ লিখতে লিখতে সাখাওয়াত হোসেন মজনুর লেখার হাতে খড়ি।
তারপর গণকন্ঠ এবং শিক্ষকতার মাধ্যমে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থেকে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূলে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু। তবে তিনি তাঁর ক্ষেত্র হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে শহর চট্টগ্রামকে বেছে নিয়েছেন। গবেষণার ফল হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে, নির্যাতন’ ৭১, রণাঙ্গনে সূর্যসৈনিক, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহর চট্টগ্রামের বধ্যভূমি ও নির্যাতন কেন্দ্র, মধ্যম নাথপাড়া ও আবদুর পাড়া বধ্যভূমি, মুক্তিযুদ্ধে আমার কৈশোর।
মুক্তিযুদ্ধের সময় শহর চট্টগ্রামের তৃণমূলের অবস্থা, মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় কেন্দ্র, গৌরবদীপ্ত অপারেশন, বধ্যভূমি, নির্যাতন কেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সহায়ক শক্তি মা-বোনদের গৌরবগাথা, ঘাতক বাহিনীর সহযোগী ও পাকিস্তান বাহিনীর দোসরদের তৃণমূলের তথ্য সংগ্রহের ২য় পর্বের কাজ শেষ করেছেন। প্রায় ১০০০ (এক হাজার) পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটির দুই খন্ডে প্রকাশের ইচ্ছে ছিল সাখাওয়াত হোসেন মজনুর। এশিয়াটিক সোসাইটি অভ বাংলাদেশ-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এর সম্পাদনায় প্রকাশিত এনসাইক্লোপিডিয়া অব বাংলাদেশ ওয়ার অব লিবারেশন গ্রন্থের ১০ পর্বের মধ্যে এই লেখকের শহর চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা পর্বের অনেকগুলো গবেষণাকর্ম স্থান পেয়েছে।
দৈনিক আজাদীর সাবেক সম্পাদক প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ এবং বর্তমান সম্পাদক এম.এ মালেকের পৃষ্ঠপোষকতায় সাখাওয়াত হোসেন মজনু ১৯৯০ সাল থেকে দৈনিক আজাদীতে ‘সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম ও দৈনন্দিন টুকিটাকি’ কলামটি লিখছিলেন।
সাখাওয়াত হোসেন মজনুর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা মোট ২৩টি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজোয়ান অব আর্ক
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরও ৪ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৮৫