প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে কেন নয় : হাই কোর্ট

| মঙ্গলবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ত্রয়োদশ থেকে কেন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ রুল দেয়। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড উন্নীত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। খবর বিডিনিউজের।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব, আইন সচিব, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটকারী শিক্ষকরা গত বছরের ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে যে আবেদন
করেছিলেন, তার নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আইনজীবী সুমন পরে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ত্রয়োদশ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। সহকারী শিক্ষকরা যে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আছেন, সে অনুসারে তারা বেতন পাচ্ছেন না। অথচ একই ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সিনিয়র নার্সরা দশম গ্রেডে বেতন পান। বিষয়টি নিয়ে রিট করলে তা শুনানি নিয়ে রুল দিয়েছে আদালত। গত বছর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে একটি চিঠি দিয়েছিল প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ। ‘প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড প্রদানে যৌক্তিকতার আলোকে প্রস্তাবনা প্রণয়ন প্রসঙ্গে’ শীর্ষক ওই চিঠির বিষয়টি আদালত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান আইনজীবী সুমন।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার পশ্চিম ইতাইলের বাসিন্দা মো. মাহবুবুর রহমান, একই এলাকার ফকিরপাড়ার মো. জহুরুল ইসলাম, ঢাকার শ্যামপুরের করিমউল্লাবাগের মুহাম্মদ আনোয়ার উল্লাহ, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুরের জাহেদুল আলম, সিলেটের বিশ্বনাথের হাশনাজীর নজরুল ইসলামসহ ১৫ জন সহকারী শিক্ষক গত ৮ নভেম্বর এ রিট আবেদন করেন। সহকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করার এই দাবি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনও করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩০ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রলায়ের সচিবের দপ্তরে একটি আবেদন করেন তারা। সে আবেদনে তাদের বেতন কাঠামো দ্বিতীয় শ্রেণিতে (দশম গ্রেডে) উন্নীত করার প্রস্তাব প্রণয়নের অনুরোধ করা হয়। তাতেও ফল না পেয়ে হাই কোর্টে রিট মামলা করেন ১৫ শিক্ষক। সারাদেশে সরকারি প্রাথমিকে সাড়ে তিন লাখের মত সহকারী শিক্ষক রয়েছে বলে রিটকারীদের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ভাষ্য।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় (দশম গ্রেডে) বেতন দিতে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে ভুতাপেক্ষভাবে তা কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করলেও তা খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে রিটকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রে হাই কোর্টের রায় বহাল থাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম দিন ধ্বংস করা হলো ১১ কন্টেনার পণ্য
পরবর্তী নিবন্ধআ. লীগের সম্মেলনে চেয়ারকে ঢাল বানিয়ে রক্ষা পেলেন নাহিদ