গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১০৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। গত বুধবার মধ্যরাত থেকে চালানো এ হামলায় নিহতের এই সংখ্যা জানিয়েছে হামাস পরিচালিত নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা। গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহে ইসরায়েলের অবোরধ চলার মধ্যেই এই হামলা চলছে। ১০টি ত্রাণ সংস্থা গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কথা জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
ফিলিস্তিনিদের নাকবা দিবসের ৭৭তম বার্ষিকী পালনের সময় ইসরায়েল এই হামলা চালাল। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৯ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ার খবর জানিয়েছে। তারা বলছে, এদের বেশির ভাগই শিশু। উত্তর গাজায় গাজা সিটি এবং জাবালিয়াতেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। আল জাজিরার এক সাংবাদিক জানান, খান ইউনিসের ৯টি বাড়িতে ইসরায়েল কোনও পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই সরাসরি জঙ্গি বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে সেই বাড়িগুলোর গোটা পরিবারই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মানুষজন ঘুমিয়ে থাকার সময় তাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এবং আশেপাশের এলাকাগুলোতে ইসরায়েল ১৩টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভোররাত থেকে চালানো ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন চিকিৎসার্মীরা। ইসরায়েলের সরে যাওয়ার নির্দেশে বার বার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পালাতে বাধ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। আল–জাজিরাকে এমনই এক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বলেছেন, তারা (ইসরায়েল) ১৯ মাস ধরে গাজায় বোমা হামলা চালাচ্ছে। গাজায় আর কি বাকি আছে? নিরীহ শিশুরা মারা যাচ্ছে। এখানে কোনও সশস্ত্র তৎপরতা নেই। বেশিরভাগই বৃদ্ধ মানুষেরা মারা যাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ইসরায়েলে ১২০০ জনের মতো মানুষ নিহত হয়। জিম্মি হন ২৫১ জন। সেদিন থেকেই ইসরায়েলে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালানো শুরু করে। সেই থেকে গাজায় যুদ্ধ চলছে। ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত সেখানে ৫২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।