২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রিসে সংঘটিত ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন হাটহাজারীর মেখল ইউনিয়নের মো. ইদ্রিস (৩৯) নামের এক যুবক। গত শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে জামিল ও বাচ্চু নামে নিহতের দুই ব্যবসায়ী বন্ধু তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত ইদ্রিস হাটহাজারী উপজেলার ৮নং
মেখল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড এলাকার মৃত সাহেব মিয়ার পুত্র।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাল্যকালে পিতৃহারা ইদ্রিস ভাগ্য বদলের আশায় প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান। পরে সেখান থেকে প্রায় ৯ বছর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ গ্রিসে চলে যান। তিনবছর আগে দেশে ছুটিতে এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে যুগল জীবন শুরু করেন। গ্রিসে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসা করা ইদ্রিস বছরখানেক আগে সর্বশেষ দেশে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় প্রবাসে চলে যান।
নিহতের বাল্যবন্ধু ওমান প্রবাসী জিয়া হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, সম্পর্কে ভাগিনা (চাচাতো বোনের ছেলে) হলেও একই বয়সী হওয়াতে আমরা ছিলাম ভাই, বন্ধুর মতো। যেদিন তাকে বহনকারী ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয় সেদিন ট্রেন ছাড়ার ৩০ মিনিট আগেও আমার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিলো
ইদ্রিসের। ইদ্রিস বলেছিলো, কার্ড নবায়ন করতে সে ওই শহরে যাচ্ছে। অনেক কথা হয়েছিল সেদিন। ভিডিও কলে ট্রেন এবং কোথায় সে বসেছে সব দেখিয়েছিল। তার সিট ছিল ২নং বগিতে। পরে রাত বেশি হয়ে যাওয়াতে ওই শহরে পৌঁছে সকালে ফোন দেবে বলে বিদায় নেয়। বুঝতে পারিনি এ বিদায় শেষ বিদায় হবে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসে অবস্থান করছিলেন নিহতের দুইবন্ধু। এদের মধ্যে বাচ্চু নামে একজন জানান, প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে হলে আগামী ২–৩ দিনের মধ্যে ইদ্রিসের মরদেহ দেশে পাঠানো সম্ভব হবে।
জানতে চাইলে নিহতের ছোট ভাই ইলিয়াস জানান, ভাইকে এভাবে হারিয়ে ফেলব কখনও কল্পনাও করিনি। আমি আর কি বলব বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দীন জানান, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে গত শুক্রবার রাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে ইদ্রিস মারা গেছে। দুর্ঘটনায ট্রেনের বগিতে আগুন ধরে যাওযাতে তার শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে যায়। তাই ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশ সনাক্ত করতে হয়েছে।