প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপে জোর দিতে হবে

ডা. ইমরান বিন ইউনুস

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

করোনার মতো বড় মহামারী মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরকে শক্তিশালী উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাইভেট-পাবলিক-পার্টনারশিপের (পিপিপি) প্রতি জোর দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন চট্টগ্রামের খ্যাতিমান চিকিৎসক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. ইমরান বিন ইউনুস। তিনি বলেন, আমাদের বাজেটগুলো তৈরি হয় ধারণাপ্রসূত। তাই বাস্তবভিক্তিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উপায় নির্ধারণ এবং এজন্য বাজেটে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘কোভিড শুরুর পর থেকে উন্নত দেশগুলোসহ সকলেই হতচকিত হয়ে উঠে। উন্নত দেশগুলোতে তাদের সিস্টেম তৈরি করা ছিলো। কোভিড শুরুর পর থেকে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও সবাই দৌড় শুরু করেছে। পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছে ‘চট্টগ্রাম শ্বাসকষ্টে ভুগছে’। এখন স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে যাই কিছু করা হচ্ছে, সবই ইচ্ছেভিত্তিক ও ধারণাপ্রসূত। কোভিড শুরুর পর থেকে গত ১৪ মাস প্রচুর সময়। এই সময়ে কোভিড মোকাবেলার সমস্যাগুলো নির্ণয় করার সুযোগ ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। আমাদের সমস্যা কতটুকু? সেই সমস্যার কতটুকু আমরা মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো? এই ধরণের মহামারী মোকাবেলা করতে গেলে আমাদের টার্গেট (লক্ষ্যমাত্রা) নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাগুলোকে সমস্যার সমান্তরালে নিয়ে আসতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ হলেও বড় কোন মহামারী আমরা শতভাগ সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারবো না।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড শুরুর পর থেকে যে সংকটগুলো ছিল, এখনো সে সংকট রয়ে গেছে। অথচ গত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে শীর্ষখাত হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থায়ী কোন পরিবর্তন আসেনি। অঙিজেন সংকট, আইসিইউ সংকট রয়েই গেছে। এই সংকটগুলো কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ডা. ইমরান বলেন, আমাদের সমস্যা যেহেতু বড়, সেহেতু আমাদের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এ সংকট মোকাবেলা করতে হবে। চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যা অনুপাতে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে সার্ভে করা যেতো। কি পরিমাণ সংক্রমণ হয়েছে? কত সংখ্যক মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হবে? সুস্থ হওয়া ১০০ কোভিড রোগীর উপর জরিপ করে মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা সহজ। একে রিয়েল টাইম এসেসম্যান্ট বলে। এর মাধ্যমে সংক্রমন থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভর্তি এবং সুস্থ হওয়া পর্যন্ত সংক্রমিতরা কী কী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, সে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে সমাধানের পথ বের করতে হবে। এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা দুরূহ। এজন্য প্রাইভেট সেক্টরকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যখাতের উদ্যোক্তাদের নীতিগত সুবিধার পাশাপাশি বাজেটে প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোভিডসহ যে কোন বড় মহামারী মোকাবেলায় প্রাইভেট-পাবলিক-পার্টনারশিপ (পিপিপি) মিলিয়ে প্রোগ্রাম তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিকিৎসা উপকরণ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা রাখা উচিত
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ‘কেরালা মডেল’ অনুসরণ করা উচিত