চট্টগ্রাম–৮ আসনের উপ–নির্বাচনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণের জন্য ২৫শ’ ইভিএম প্রস্তুত করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ এপ্রিল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটের ফলাফল দ্রুত পাওয়ার জন্য প্যাড ব্যবহার করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা: জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, চট্টগ্রাম–৮ আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৯০টি। ভোটকক্ষ ১৪১৪টি। ভোটগ্রহণের জন্য প্রায় চার হাজার ৬৫০ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ১৯০ ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৯০ জন প্রিসাইডিং অফিসার। ১৪১৪ ভোটকক্ষের জন্য একজন করে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার। দুইজন করে পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চার হাজার ৪৩২ জন কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। এরসঙ্গে আরও ৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সবমিলে প্রায় চার হাজার ৬৫০ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোট গ্রহণের জন্য বুথে ব্যবহার করা হবে ২২শ’ ইভিএম। এছাড়াও প্রদর্শনী এবং প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হবে ৩শ’ ইভিএম। নির্বাচনের জন্য ইভিএমও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
৬ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর মোট ৫ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ (নৌকা), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (চেয়ার), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মোহাম্মদ আবদুস সামাদ (মোমবাতি), এনপিপির কামাল পাশা (আম), স্বতস্ত্র প্রার্থী মীর মো. রমজান আলী (একতারা)। এদিকে চট্টগ্রাম–৮ আসনের উপ–নির্বাচনে মোট ২২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুই ভাগে ২২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। গত ৬ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর ২৬ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আরও ছয়জন যুক্ত হয়ে মোট ২২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসির উপ–সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি চিঠি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হয়েছে। গত ১২ ও ১৩ এপ্রিল বোয়ালখালীতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর অংশে প্রশিক্ষণ শুরু হবে আগামীকাল ১৫ থেকে শুরু করে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে দ্রুত ফলাফল ঘোষণার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে প্যাড ব্যবহার করা হবে। ১৯০টি ভোটকেন্দ্রের সবকটিতেই এসব প্যাডের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটের ফলাফল রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। এর ফলে ভোটের ফলাফল দ্রুত ঘোষণা করা হবে। এ আসনটি এর আগেও একবার শূন্য হয়েছে ২০১৯ সালে। মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) নেতা মইন উদ্দিন খান বাদল ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর মারা যান। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারির উপ–নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমদ। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন এই আসনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ এপ্রিল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য বোয়ালখালী পৌরসভা ও বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পশ্চিম গোমদনন্ডী, পূর্ব গোমদন্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম–৮ সংসদীয় আসন।