প্রস্তুত বীজতলা, চারা রোপণের অপেক্ষা

বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় আমনের ভালো ফলন পেয়ে এবার বোরো আবাদে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে কৃষক। ইতিমধ্যেই ৮০ শতাংশ বীজতলা তৈরি হয়ে গেছে। আর এক সপ্তাহ পরেই রোপণ কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তাই জমি প্রস্তুত করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে গেল আমন মৌসুমে ৩৪৩৫ হেক্টর জমিতে গড়ে সাড়ে ৫ মেট্রিক টন করে ফলন এসেছে। বাজারেও ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক। এবার ৮৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এরমধ্যে গুমাইবিলে লক্ষ্যমাত্রা ৩৪৬০ হেক্টর। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বীজতলা তৈরীর কাজ শুরু হয়ে চলবে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বোরো মৌসুমে এবার কৃষকদের আবাদকৃত জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রীধান৮৮, ৮৯, ৯২, ১০০(বঙ্গবন্ধু), ব্রীধান৭৪, হীরা ১, , তেজগোল্ড, সুরভী, সিনজেন্টা১২০২ ও ১২০৫ জাত, কৃষিবিধ হাইব্রিড ধান ১ ও ২, এসএলএইটএইট, সুপারস্বর্ণা গোল্ড, এসিআই, মাহিকো১। এছাড়া স্থানীয় উন্নত জাতের মধ্যে কাটারীও চাষাবাদ হচ্ছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে রোপণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, বোরোর জমি প্রস্তুত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন, কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন।

আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। স্থানীয় কৃষক মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, গেল মৌসুমে বন্যা, পোকার আক্রমণসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই বোরো মৌসুমে এবার তিনি ৮০ কানি জমিতে চাষাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার বীজতলা ইতিমধ্যেই চারা রোপণের উযুক্ত হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রোপণ শুরু করবেন।

একই কথা জানালেন মো. জামাল নামে অপর এক কৃষক। তিনিও এবার ১০ কানি জমিতে বোরো আবাদ করবেন বলে জানান। একইভাবে স্থানীয় কৃষক নাজু সওদাগর ৬০ কানি, আবু জাফর ৮ কানি জমিতে বোরো আবাদের জন্য বীজতলা তৈরী করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে শীতের কুয়াশায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তারা।

চলতি মাসের ১৫২০ জানুয়ারির মধ্যে রোপণ শুরু হবে বলে তারা জানান। গুমাইবিলে দায়িত্বরত উপসহকারী উত্তম কুমার জানান, ইতিমধ্যেই ৮০% বীজতলা তৈরি হয়ে গেছে। এক হেক্টর বীজতলা থেকে ২০ হেক্টর ধানিজমি রোপণ করা যায়। বীজতলা তৈরি থেকে ১৪০১৪৫ দিনের মধ্যে ফলন আসবে বোরোর। উন্নতজাতের বীজের আবাদ হওয়ায় এবার বোরোতে ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে ৬ ও ৭ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন , বোরো আবাদে কৃষকের উৎসাহ জোগাতে বিপুল পরিমাণ উন্নতজাতের কৃষি বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। এছাড়া বীজতলা থেকে রোপণ কার্যক্রম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। আশাকরি কৃষকরা বরাবরের মতোই ভালোভাবে বোরো আবাদ সম্পন্ন করতে পারবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৃষক পরিবারের ঐতিহ্য খড়ের গাদা
পরবর্তী নিবন্ধসবুজে আচ্ছাদিত মাতামুহুরীর দুই তীরসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি