অব্যাহত আছে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত গৃহকরের আপিল শুনানি। গতকাল রাজস্ব সার্কেল–১ এর আওতাধীন জালালাবাদ, পশ্চিম ষোলশহর ও শুলকবহর ওয়ার্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৩২ টি আপিল নিষ্পত্তি করেন মেয়র।
শুনানিতে অংশ নেয়া ভবন মালিকরা ‘সহনীয়’ গৃহকর নির্ধারণ করায় সন্তুষ্টি ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তারা জানান, মেয়র যে ভেল্যু চূড়ান্ত করেছেন তা তাদের প্রত্যাশিত। প্রস্তাবিত ভ্যার ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন করদাতারা। এসময় মেয়র তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। নাসিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ খান। তার হোল্ডিংয়ের বিপরীতে গৃহকরের মূল্যায়ন ছিল এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। যা চসিকের পঞ্চবার্ষিকী করপুর্নমূল্যায়নে বৃদ্ধি করে প্রস্তাব করা হয় চার লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আপিল করেন তিনি। গতকাল শুনানিতে তা কমিয়ে দুই লাখ টাকায় চূড়ান্ত করেন মেয়র। শুনানিতে অংশ নেয়া নজরুল ইসলামের ৮০ হাজার টাকার প্রস্তাবিত ভেল্যু ৩০ হাজার টাকা এবং কামাল উদ্দিনের তিন লাখ ২০ হাজার টাকার প্রস্তাবিত ভেল্যু ৮০ হাজার টাকায় চূড়ান্ত করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, গৃহকর নির্ধারণে ভবনের মূল্যায়নই হচ্ছে ‘ভেল্যুয়েশন’। চূড়ান্ত হওয়া ভেল্যুর বিপরীতে ১৭ শতাংশ পৌরকর পরিশোধ করতে হয় ভবন মালিকদের। এর মধ্যে ৭ শতাংশ গৃহকর, ৩ শতাংশ আলোকায়ন রেইট এবং ৪ শতাংশ আবর্জনা অপসারণ রেইট রয়েছে।
শুনানির শুরুতে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বলেছিলাম নগরবাসীর উপর অতিরিক্ত গৃহকরের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে না। বিগত ২০১৭ সালে নিয়মানুযায়ী পঞ্চবার্ষিকী গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। সে সময়ে আমি মেয়রের দায়িত্বে ছিলাম না। নগরবাসীর আন্দোলনের ফলে ২০১৭ সালে গৃহকর মূল্যায়ন বাস্তবায়ন স্থগিত করা হয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দেড় বছর পর সরকার গৃহকরের উপর আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যহার করে নেয়। এর ফলে ২০১৭ সালের গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন কার্যকর করতে গিয়ে ব্যাপক অসংগতি প্রত্যক্ষ করি। তাই করদাতাদের বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ দূর করার জন্য আমি আপিল বোর্ড গঠন করি এবং পরবর্তীতে নিজে উপস্থিত থেকে শুনানির উদ্যোগ নিই। এতে করদাতারা সন্তুষ্ট হচ্ছেন এবং বিভ্রান্তিও দূর হচ্ছে।
তিনি গৃহকর নিয়ে নগরবাসীকে আতংতিক না হয়ে আপিল করে গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
মেয়র বলেন, কোনো কর বাড়ানো হয়নি শুধুমাত্র করের আওতা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ কোনো স্থাপনা বৃদ্ধি করা হলে সেই বর্ধিত অংশের কর নির্ধারণ করে পূর্বের করের সাথে সংযোজন করা হয়।
মেয়র বলেন, একটি মহল গৃহকর নিয়ে করদাতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের বিভ্রান্তিতে কর্ণপাত না করে কর পুনর্মূল্যালয়নে আপিল বোর্ডে উপস্থিত হয়ে সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ চূড়ান্তকরণে অংশ নিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্যে রাখেন রিভিউ বোর্ডের প্রধান কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম, মো. মোবারক আলী, সংরক্ষিত কাউন্সিলর জেসমীন পারভিন জেসী, রিভিউ বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুল রশিদ, এডভোকেট মো.আমির খসরু চৌধুরী, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরিজ, কর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহম্মদ সরোয়ার চৌধুরী।