প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে সম্পাদক পরিষদের বক্তব্য

| বুধবার , ২০ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ গতকাল এক বিবৃতিতে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে পরিষদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “কোভিড মহামারীর অভিঘাতে সংবাদপত্র শিল্প আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে-বিদেশে অনেক দৈনিক পত্রিকা ছাপা বা প্রিন্ট সংস্করণ কমাতে বা বন্ধ করতে শুরু করেছে। বিজ্ঞাপনের আয় হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ছাপা পত্রিকা স্থানান্তরিত হয়েছে ডিজিটাল প্লাটফর্মে।

এমন পরিস্থিতিতে কঠিন সময় পার করছে ছাপা পত্রিকা। কিন্তু সংবাদপত্রের এই সংকটকালীন সময়ের মধ্যেই গত ২৮ মার্চ, ২০২২ তারিখে জাতীয় সংসদে ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২’ উত্থাপন করা হয়েছে। এই প্রস্তাবিত আইনটি বিশ্লেষণ করে এর ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সংবাদিকবান্ধব নয় বলে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।

সম্পাদক পরিষদ মনে করে যে প্রস্তাবিত ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন, ২০২২’-এর মাধ্যমে-
(১) গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থ রক্ষার নামে গণমাধ্যম শিল্প ও গণমাধ্যমকর্মীদের আমলাতন্ত্রের অধিকতর নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।
(২) গণমাধ্যম আদালত ও আপিল আদালত গঠনের মাধ্যমে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের আদালত স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।
(৩) এই আইন বাস্তবায়ন হলে এডিটোরিয়াল ইনস্টিটিউশন পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
(৪) মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদেরকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ বানানো হয়েছে এবং এর ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
(৫) যদিও সংবাদপত্র শিল্প ব্যক্তিমালিকানাধীন, কিন্তু এ আইনে গণমাধ্যম পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপের পথ উন্মোচন করা হয়েছে।

এই আইন পাস হলে তা স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে। এরকম আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তাই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। সার্বিকভাবে এ আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে।” খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪৫ ঘণ্টা পর বাইক চালকের লাশ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধনগরের নতুন মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু