প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার

জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার

বান্দরবান প্রতিনিধি | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার সীমান্তবর্তী মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে র‌্যাবের অভিযানে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র ৭ জন এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সস্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ৩ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় র‌্যাব সীমান্তবর্তী একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পও ধংস করেছে। প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পোশাক এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পাহাড়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। পাহাড়ে ৫০টিরও বেশি জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তৎপরতার তথ্য রয়েছে। চলমান অভিযানে ইতিমধ্যে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ধংস করা হয়েছে। র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের ভ্রমণে সাময়িক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তবে সেটি সামগ্রিকভাবে নয়। রুমা ও রোয়াংছড়ি দুটি উপজেলার দুর্গম দর্শনীয় স্থানগুলোতে সাময়িকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অভিযান শেষে খুব শীঘ্রই খুলে দেয়া হবে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া তরুণরা জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এ সব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া ১৯ জেলার ৫৫ তরুণের তালিকা প্রকাশ করেছে র‌্যাব। পাহাড়ে এ অভিযানে সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার নেতৃত্বে র‌্যাব ৭ ও র‌্যাব ১৫ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন জঙ্গি সংগঠনের সৈয়দ মারুফ আহমদ, ইমরান হোসাইন, কাওসার, জাহাঙ্গীর আহমদ, ইব্রাহিম, আবু বক্কর সিদ্দীক, রুফু মিয়া এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সদস্য জৌথান সাং বম, স্টিফেন বম, মাল সম বম।

এ সময় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে ৯টি বন্দুক, বন্দুকের ৫০ রাউন্ড গুলি, কার্তুজ কেইস ৬২টি, হাত বোমা ৬টি, কার্তুজ কেইস ১টি, কার্তুস বেল্ট ২টি, দেশীয় পিস্তল ১টি, ওয়াকিটকি সেট ১টি, চার্জার ৩টি, কুকিচিং লেখা ১০টি মানচিত্র এবং অস্ত্র গোলা বারুদ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, সীমান্ত থেকে র‌্যাবের অভিযানে আটক জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়ার ৭ সদস্য ও কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) তিন সদস্যকে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাঙামাটি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আকতারের চতুর্থ আদালতে হাজির করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালত আসামিদের জেলা হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

রাঙামাটি কোর্ট পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, আসামিদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে রাঙামাটির বিলাইছড়ি থানায় মামলা করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিকআপ সরাতে বলায় খুন
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়ে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ