প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে দেশবিরোধী অপতৎপরতা আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ৪৮ নাগরিক। গতকাল সংবাদমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে দেশ–বিদেশে বসবাসরত এসব ব্যক্তি বলেন, কিছুদিন ধরে আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সাথে দেখতে পাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের কর্মচারীরা রাষ্ট্রের কাজে মনোনিবেশ না করে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। তাদের এই কাজ আমাদের ফ্যাসিস্ট আমলের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
আগের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রশাসন ক্যাডারদের অভূতপূর্ব ক্ষমতা ও সুবিধা দিয়েছিল অভিযোগ করে এতে বলা হয়, এর বিনিময়ে প্রশাসন ক্যাডার এবং পুলিশ সার্ভিস ছিল সেই স্বৈরাচারী সরকারের অবৈধ, অগণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রধানতম সহযোগীদের অন্যতম। খবর বিডিনিউজের।
এমনকি ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনী, সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব হাসিনার সরকারের দুঃশাসনের সহযোগী হিসেবে দ্বায় স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে কিন্তু প্রশাসন ক্যাডার থেকে এরকম কোনো ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, দ্বায় স্বীকারোক্তিও আসেনি। তাই পুরো দেশ যখন সংস্কারের পক্ষে তখন প্রশাসন ক্যাডাররা সংস্কার বন্ধ করার জন্য যেভাবে ন্যাক্কারজনকভাবে চেষ্টা করছে আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।‘
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী গত ১৭ ডিসেম্বর এক সভায় পরীক্ষার মাধ্যমে জনপ্রশাসনে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া এবং এ পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কোটা ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সুপারিশ তুলে ধরেন।
বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ এবং অন্য সব ক্যাডারের ২৫ শতাংশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। সংস্কার কমিশনের ওই সুপারিশের প্রতিবাদে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান কর্মকর্তারা।
পরে ২৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের বিয়াম ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে প্রতিবাদ সভা করে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তারা কমিশনের সুপারিশকে ‘অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। উপসচিবের শতভাগ পদে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা পড়লে ‘সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান’ ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।