প্রশাসনহীন ক্যাম্পাসে চবির ভূমি দখলের অভিযোগ

ইমাম ইমু | শনিবার , ৩১ আগস্ট, ২০২৪ at ৪:২২ পূর্বাহ্ণ

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অস্থির পরিস্থিতির সুযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মামলা প্রক্রিয়াধীন জায়গা অবৈধভাবে অধিগ্রহণ ও দেওয়াল তোলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত ৬ আগস্ট থেকে উচ্চ আদালতের ‘স্টে অর্ডার’ থাকা সত্ত্বেও এতে পাকা স্থাপনা ও টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন অভিযুক্তরা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধা দিলেও অভিযুক্তরা কর্ণপাত করেননি বলে জানা গেছে।

জানা যায়, জায়গাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরিটরি স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন শাহী কলোনির পূর্ব পাশে অবস্থিত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন মিঠাছড়া মৌজার বি.এস. ২২০/১ নম্বর খতিয়ানের বি.এস. ২৭৫৪ দাগের ৫ শতক জায়গাটি। জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধা দিলে উল্টো হুমকিধমকি ও জনবলের শক্তি দেখায় বলেও জানা গেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, মৃত ফজর ইসলামের ছেলে আলমগীর, রায়হান ও রাশেদসহ স্থানীয় কয়েকজন। অভিযুক্ত আলমগীর স্থানীয় বাসিন্দা ও চট্টগ্রামের গবেষণা পরিচালনা পরিষদের কর্মচারী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই জায়গাটির বিএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য বিবাদীগণের পিতা ফজর ইসলাম জজ আদালতে ডিক্রি প্রাপ্ত হন। যার মামলা নম্বর ২২৭/০৫। এই ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয়। যার মামলা নম্বর ৪৯৭/২০১১। ২০১১ সালে মামলা দুইটির শুনানি শেষে ডিক্রি বাতিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রায় দেয় আদালত। ফজর ইসলামের মৃত্যুর পর ২০১৭ সালে তার ওয়ারিশগণ উচ্চ আদালতে সিভিল রিভিশন করেন। তখন মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ‘স্টে অর্ডার’ দেওয়া হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখা ও নিরাপত্তা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের সময় বাধা প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর। কিন্তু অভিযুক্তরা বাধা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যায়। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ অচল থাকায় কোনো মামলা করার সুযোগ হয়নি বলে জানায় চবির এস্টেট শাখা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে দেওয়াল দিলেও শাহী কলোনির পূর্বপাশে মামলাধীন জায়গাটিতে দেওয়াল দেয়নি প্রশাসন। বর্তমানে জায়গাটিতে দেওয়াল উঠিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেখা যায় এক তলা টিনশেড ঘরটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শ্রমিকরা ঘর নির্মাণের কাজ করছেন।

এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ আজাদীকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত রয়েছে। অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের সময় নিরাপত্তা দপ্তর বাধা দিয়েছে। অভিযুক্তরা বাধা মানেননি। আমরা সেনাবাহিনীকে অবহিত করেছি। তখন থানা সচল না থাকায় পুলিশ কিছু করতে পারেনি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে। দরকার হলে আবার আইনের দ্বারস্থ হবে।

এই ব্যাপারে অভিযুক্ত আলমগীর আজাদীকে বলেন, এই জায়গাটি আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই, আমি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরিজীবী। আমাদের বিরোধ হচ্ছে পাশের অন্যজনের সঙ্গে। তিনি দীর্ঘদিন আমাদের হয়রানি করে আসছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউনূসকে ফোন শেহবাজের, সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনে গুরুত্ব আরোপ
পরবর্তী নিবন্ধসাকিব, ফেরদৌস ও ব্যারিস্টার সুমনসহ সাবেক সাত এমপির গাড়ি খালাস