প্রয়োজনে কূটনৈতিক চাপ দিয়ে ভারতকে তিস্তা চুক্তিতে বাধ্য করা হবে : আসিফ মাহমুদ

| সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার পরাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে শিরদাঁড়া সুদৃঢ় ও উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিতে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার ভারতের সাথে মাথা উঁচু করে কথা বলবে। সেই সাথে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পানি আইনের ভিত্তিতে কুটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে ভারত এই চূক্তিতে সাক্ষর করতে বাধ্য হয়। গতকাল রোববার পড়ন্ত বিকেলে তিস্তা নদীর পাড়ে তিস্তা রেলব্রিজ এলাকায় রংপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজিত তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। খবর বাসসের।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে একটি খসড়া নিয়ে বাংলাদেশ ২০১১ সাল থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু বলে গেছে, ‘ভারতকে যা দিয়েছি, আজীবন মনে রাখবে’। সত্যিকারেও তারা ভারতকে শুধু দিয়েছে, কিন্তু কিছু আদায় করতে পারেনি। নতজানু পরাষ্ট্রনীতির কারণে তারা ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শুধু ছবিই তুলেছে, কিন্তু তিস্তার কথা বলার সাহস পায়নি। তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে উত্তরবঙ্গ যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলো। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এই উত্তরবঙ্গ বিশেষ বরাদ্দ পাবে, সকল উন্নয়ন প্রকল্পে উত্তরবঙ্গ থাকবে। উত্তরবঙ্গে কৃষি শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার কৃষিশিল্প নিয়ে কাজ করছে। কোথায় কোথায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা যায়, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে করে কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পান। এছাড়া উত্তরবঙ্গের যে সব উপজেলায় শিক্ষার হার কম সেই উপজেলাগুলোতে স্থানীয় সরকার আধুনিক ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি তৈরি করবে। আসিফ মাহমুদ বলেন, এর আগে রংপুরের পীরগাছায় এসেছিলাম। পীরগাছা মানুষের দাবি ছিল, পীরগাছা থেকে চিলমারী একটি সংযোগ ব্রিজ নির্মাণের। সেই ব্রিজ নির্মাণে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অতিদ্রুত ব্রীজটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হবে। এই ১৪শ মিটারের ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।

এর আগে গনশুনানিতে আসা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তার চরাঞ্চল থেকে নারী পুরুষেরা তিস্তার ভাঙ্গনসহ তাদের দুঃখদুর্দশার কথা তুলে ধরেন। এসময় তিস্তা রেলব্রিজ এলাকায় তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানি মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম তারিকুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, নদী গবেষক নজরুল ইসলাম হক্কানী, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গবেষক ড. আতিক মুজাহিদ, আবু সাঈদ লিয়ন, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ভরসা ও মোমিনুল হকসহ অন্যান্য বক্তাগণ। এর আগে সকাল থেকেই তিস্তা নদী নিয়ে গণশুনানিতে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষজন আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ঢল নামে তিস্তা পাড়ে। গণশুনানিতে অংশ নেয়া মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের কথা নিছক প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বর্তমান সরকারের আমলেইএই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চান এলাকাবাসী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিকদের কর্মসূচি ২ মাসের জন্য স্থগিত
পরবর্তী নিবন্ধগণঅভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণের স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত