প্রবাসে রমজানের অন্যরকম অনুভূতি

এমরান হোসাইন | শনিবার , ২৯ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

রমজান মাস শেষে খুশির সওগাদ নিয়ে আসে ঈদ। এ সময় বাংলাদেশের মত সুদূর আমেরিকায় সব মসজিদে অধিকাংশ বাংলাদেশী মুসলমান ভাইবোনদেন দেখা মেলে। বস্তুগত সাফল্য এবং অগ্রগতির পেছনে ছুটে চলা সমাজে রমজান হলো বিশ্বাস ও ঐক্যের প্রতীক। আর এ বিশ্বাস মানুষকে প্রভাবিত করে। সারাদিন উপবাসের পর ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। ছেলেবেলায় সেহেরীর সময় রণি বিশ্বাসের ডাকে ঘুম ভাঙতো। দুকাঁধে দধির হাড়িপাতিল। বাড়িবাড়ি গিয়ে; সে কি হাঁকডাক তার। দধি ছাড়াও কলাপাতায় মোড়ানো মাখন বেশ মজাদার ছিল। জীবনের কতগুলো বসন্ত পার হয়ে গেছে, আবছা স্মৃতিগুলো ম্লান হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে সব পাখি নীড়ে ফেরে। সব নদী ফিরে যায় মোহনায়। কিন্তুু আমরা সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ ঘনকালো আঁধারের অতলে যুবে যাওয়ার আগেও জীবনের তরীটি কূলে ফেরাতে পারি না। তাই ছুটে চলি রঙিন স্বপ্ন যাত্রায় দেশ থেকে দেশান্তরে। যেখানে কেমন কাটে দিন, রাত যাই কিভাবে; পিছনে ফিরে তাকাবার ফুরসত নেই।

ফ্রীডম অব রিলিজিওন’এর দেশ আমেরিকা। য়েখানেযে যার ধর্ম পালন করার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দেয়া আছে। ট্টাম্পের (রেডন্যাক ) রাজ্য ক্যানসাস। ধর্মবর্ণ সবাই মিলেমিশে যেযার মত করে চলা ফেরা করে থাকেন। এখানে চার্চমসজিদমন্দির পাশাপাশি সবই আছে। মসজিদগুলোতে আন্তধর্মীয় ‘অল ফ্যাথ রিলিজিওন’ ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়ে থাকে। গুগল থেকে জানা যায়যুক্তরাষ্ট্রে ২৭৬৯টি ছোটবড় সমজিদ রয়েছে। ইফতারের সব আয়োজন সবখানে রয়েছে। তারপরেও কী যেন নেই। এখানে বেশীর ভাগ ধর্মপ্রাণ বাংলাদেশী মসজিদে ইফতার করে থাকেন। সবার বিশ্বাস, মসজিদে ইফতার রমজানের পূর্ণতা মেলে। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই। যেদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানের দেখা মিলবে না মসজিদভিত্তিক এ ইফতার আয়োজনে। কাজকাজকাজ; মাস শেষে বিল পে হলো প্রবাস জীবন। যান্ত্রিকতার এ জীবনে একটু স্বস্তির খোঁজে কমিউনিটি পরিবার নিয়ে ইফতার একঅপরের ভাব বিনিময়ের মহাসুযোগ নিয়ে আসে। এসময় প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের দেখা মেলে। খরচসময় বাঁচাতে ফ্রী ইফতারীর জুড়ি নেই। মসজিদ কেন্দ্রিক ইফতারীতে বাঙালিয়ানা খাবার না থাকলেও প্যাকেটজাত মজাদার খাবার পরিবেশন করা হয়ে থাকে। ইফতারী নিয়ে রাস্তায় জ্যামে পড়া, রাস্তায় ইফতার করা, সে প্যারাটা এখানে নেই। আমেরিকায় বাংলাদেশী খাবারের দোকানে চনাপিয়াজু, হালিম, বেগুনী, জিলাপী, কালোজাম সবই পাওয়া যায়।

রমজানঈদকোরবানী ঈদ আসলেই মনের জানালায় অমলিন স্মৃতিগুলো উঁকি দেয়। বিশেষ করে ইফতার টাইম। সারাদিন পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যায় ক্লান্তি দূর করা রুহ আফজা দিয়ে শরবত পান। এর সাথে অন্যকিছু তো ছিলই। মাবাবা ভাইবোন মিলে ইফতারী করা। খুব মিস করিমায়ের হাতে রান্না করা সুস্বাদু পায়েসসেমাই।

লেখক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদ সামাজিক সমপ্রীতির বার্তা বহন করে
পরবর্তী নিবন্ধছোটোবেলায় ঈদ আসতো জবাকুসুমের ঘ্রাণে