ফেনীর এক প্রবাসীর মরদেহ দেশে ফেরার কয়েক মিনিটের মধ্যে তার স্ত্রীরও মৃত্যু হয়েছে। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের এক ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের চর কালিদাস গ্রামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, জামাল উদ্দিন (৪৭) অসুস্থ হয়ে মালদ্বীপে মারা যান। মরদেহ মঙ্গলবার বাড়ি আসার ৫ মিনিটের মধ্যে স্ত্রী খোদেজা বেগমের (৩৮) মৃত্যু হয়। বাবার পর মায়ের মৃত্যু দেখে বড় ছেলে মো. আজাহারও (১৮) অসুস্থ হয়ে পড়েন; পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে বা-মাকে হারানো দুই সন্তানের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর বিডিনিউজের।
নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে ফেনীর ফরহাদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ১৪ বছর আগে মালদ্বীপে পাড়ি জমান জামাল উদ্দিন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় ছুটিতে তিন-চারবার বাড়িতে এসেও ঘুরে যান। গত ২৩ জুন জামাল উদ্দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালদ্বীপে মারা যান। মঙ্গলবার রাত ৯টায় তার মরদেহ ফেনীর ফরহাদনগর ইউনিয়নের চর কালিদাস গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।
জামাল উদ্দিনের ভাগিনা রবিউল হক ওরফে মাস্টার বলেন, মামা জামাল উদ্দিনের লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর পর পরই লাশ দেখে নির্বাক হয়ে যান মামি খোদেজা বেগম। পাঁচ মিনিট পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপতালে নেওয়া হয়; সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাবার পর মায়ের মৃত্যু দেখে বড় ছেলে মো. আজাহারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে তাকে ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেশী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আজাহারকে হাসপাতালে ভর্তির পর মা খোদেজার মরদেহ ঘরে রেখে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বাবা জামালের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। একটু সুস্থ হলে সকালে ছেলেকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এনে বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাবার কবরের পাশে মা খোদেজা বেগমকেও কবর দেওয়া হয়। স্বজনদের সঙ্গে দুই ছেলেও মায়ের জানাজায় অংশ নেন। বুধবার বিকালে ফের আহজার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফেনী জেলা ক্রিকেট কোচ রিয়াজ উদ্দিন রবিন বলেন, এই দম্পতির বড় ছেলে আজহার এবার ফেনী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও ফেনী ক্রিকেট একাডেমির ছাত্র। ছোট ছেলে হৃদয় স্থানীয় একট স্কুলে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত রয়েছে।