প্রবাসী বাবাকে কখনো দেখবে না অনাগত সন্তান

সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীর সব ধরনের বিপদ থেকে পরম যত্নে আগলে রাখেন বাবা। এই শব্দটির সঙ্গে যেন জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, নির্ভরতা আর ভরসার ছায়া। আর সেই বাবাকে কখনো দেখবে না আলমগীরের অনাগত সন্তান। গত বুধবার রাত ১০টায় (সৌদি সময়) সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান লোহাগাড়ার যুবক মোহাম্মদ আলমগীর (৩৮)। তিনি উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জকরিয়া পাড়ার আশরফ আলীর পুত্র।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবের আবাহা মাহাইল এলাকায় একটি বেকারিতে চাকরী করতেন আলমগীর। ঘটনার রাতে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার সময় একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। এরপর দ্রুতগতির একটি লরি তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। নিহতের মরদেহ বর্তমানে আবাহা মাহাইলের একটি হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

নিহতের চাচা নুরুল ইসলাম জানান, রাত আড়াইটার দিকে মুঠোফোনে আলমগীরের রুমমেট মো. ফারুক এই মৃত্যুর সংবাদ জানায়। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত ভাতিজা আলমগীর সৌদি আরবে আসাযাওয়ার মধ্যে ছিলেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরে ৬ মাসের ছুটি কাটিয়ে সৌদি চলে যান। গ্রামে বসতঘর না করায় প্রায় ২ বছর যাবত আধুনগর খাঁন হাট বাজারের পাশে একটি ভবনে ভাড়া বাসা নিয়ে পরিবারকে রেখেছেন। বাসায় তার স্ত্রী শামিমা আক্তার ও শাহরিয়ার মোহাম্মদ শোয়াইব নামে সাড়ে ৪ বছর বয়সী এক ছেলে আছে। শিশুটি স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের নার্সারিতে পড়ে। এছাড়া শামিমা আক্তার ছয় মাসের অন্তস্বত্ত্বা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আলমগীরের বাসায় সুনসান নীরবতা, স্তব্ধ পুরো বাসা। অনেক আত্মীয়স্বজন এসেছেন সান্ত্বনা দিতে। অন্তস্বত্বা শামিমা স্বামীর মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে সংঙ্ঘা হারিয়ে ফেলেছেন। কারো সাথে কোনো কথা বলতে পারছেন না। সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যায় আলমগীরের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়েছিল তার। শিশু শাহরিয়ার মোহাম্মদ শোয়াইবকে বাবা কখন আসবে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, বাবা আর কোনোদিন আসবেন না।

নিহতের চাচাতো ভাই রায়হানুল ইসলাম জানান, পরিবারের সকলে আমার ভাই আলমগীরের মরদেহ দেশে ফেরত আনতে চান। শেষ ঠিকানা যেন দেশের মাটিতে হয়। তার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।

পুটিবিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আলমগীরের মরদেহ দেশে আনা কিংবা সেখানে দাফনের ব্যাপারে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুড়িয়ে পাওয়া মর্টার শেল বিক্রি করতে যাচ্ছিল রোহিঙ্গা শিশুরা
পরবর্তী নিবন্ধকী হচ্ছে মিয়ানমারে, এই বিদ্রোহী কারা