প্রবারণায় ফানুসে বর্ণিল চট্টগ্রামের আকাশ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ at ৪:২৯ পূর্বাহ্ণ

একের পর এক আকাশে ওড়ানো হচ্ছে রঙবেরঙের ফানুস। উড়তে উড়তে ফানুসগুলো মিশে যাচ্ছে দূর নীলিমায়। মুহূর্তের মধ্যে রঙবেরঙের ফানুসের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে চট্টগ্রামের আকাশ। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে প্রবারণা পূর্ণিমার সন্ধ্যা আকাশের এমন মুগ্ধতা প্রাণ ছুঁয়েছে হাজার হাজার নারী পুরুষের।

উৎসবমুখর পরিবেশে চট্টগ্রামে উদযাপিত হয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। সন্ধ্যা হতেই শত শত ফানুসের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠে পূর্ণিমার চাঁদ ওঠা আকাশ। এসময় আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর গানে মেতে ওঠেন সব বয়সের মানুষ। নারীপুরুষ, শিশুসহ সকল বয়সী মানুষ মেতে ওঠে প্রবারণার আনন্দে। এ সময় সাধারণ মানুষ আকাশপানে তাকিয়ে বর্ণিল সৌন্দর্য উপভোগ করে। দেশের অন্যান্য বিহারের মত চট্টগ্রামের নন্দন কানন বৌদ্ধ বিহার এবং কাতালগঞ্জ নব পণ্ডিত বিহারের চিত্র ছিল এটি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, আকাশে ফানুস ওড়ানো কেবল বৌদ্ধদের উৎসব নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। তাই ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বুদ্ধের প্রবর্তিত মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে ওড়ানো হয় ফানুস।

বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন চার রাস্তার মোড়সহ আশপাশের পুরো এলাকা ফানুস উৎসবের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও কাতালগঞ্জ নব পণ্ডিত বিহারেও ফানুস উৎসবের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যার সময় কীর্তন সহকারে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ওড়ানো হয় আকাশ প্রদীপ বা ফানুস বাতি। এ সময় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ সমবেত হয়ে উৎসবে মেতে ওঠে। প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে সব বিহারে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার কারণে এবারও প্রবারণা উৎসবে ব্যাপক সংখ্যা মানুষের সমাগম ঘটে। গতকাল প্রবারণার ভোরে ফুল, ফলাদি, ধুপবাতি ইত্যাদি নিয়ে সকলে বৌদ্ধ বিহারে হাজির হন। উপস্থিত সকলে সমস্বরে মন্ত্রের মাধ্যমে পূজনীয় ভিক্ষুর সান্নিধ্যে পূজা উৎসর্গ করেন। এরপর দায়কদায়িকরা অষ্টশীল,পঞ্চশীল গ্রহণ করেন। বেলা এগারটায় শেষ হয় প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনায় মিলিত হন সকলে। প্রার্থনা শেষে বুদ্ধের সম্মুখে মোমবাতি প্রজ্বলন করে সকলে। এরপর শুরু হয় ফানুস উড়ানোর উৎসব। তরুণযুবরা ঢোল, কাসর, মন্দিরা ইত্যাদি বাজিয়ে বুদ্ধকীর্তন গাইতে থাকেন আর এদিকে জাদু মন্ত্রের মতো একের পর এক আকাশে উড়তে থাকে ফানুস। ফানুসের আলোর সাথে সাথে তারুণরা আতশ বাজির উৎসবে মেতে উঠেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধট্রাম্প ও হ্যারিস কার অবস্থান কেমন?
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের ৩০ উপজেলা ও পৌরসভা পেল ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা