চার দিনের সফরে আজ ২৬ মার্চ চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটাই হবে কোনো দেশে তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তার। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকালে সফরসঙ্গী থাকবেন ৫৭ জন। তার চীন সফর বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা যায়। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সেখানে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করছি। তার মধ্যে থাকবে মানবসম্পদ উন্নয়ন, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াবিষয়ক সহযোগিতা, গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে সহযোগিতা। এছাড়া অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চল ইত্যাদি সম্পর্কিত ঘোষণা আসতে পারে। খবর বাংলানিউজের।
তিনি বলেন, চীনের গ্রেট হলে প্রধান উপদেষ্টা এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিংপিংয়ের নেতৃত্বে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কৌশলগত বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কৃষি, অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহায়তা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা হবে।
বিডিনিউজ জানায়, চীন সফরে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, সফরের মূল ফোকাস হচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক। এছাড়া চীনা বিনিয়োগকারী, উৎপাদনকারী কোম্পানি, এনার্জি কোম্পানিসহ দেশটির বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার অর্থনৈতিক কূটনীতির মূল কাজ হচ্ছে বাংলাদেশকে পুরো বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন, যাতে বাংলাদেশ যেন এ অঞ্চলের একটি বড় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হয়। সেজন্য যত ধরনের পলিসি, সংস্কার নেওয়া দরকার তা নেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সংস্কার সরকার করছে। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতে যাতে বিদেশি বিনিয়োগে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য ওয়ান স্টপ সাপোর্ট ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর ও ভারতকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত ও চীন আমাদের বন্ধু। আমাদের সঙ্গে ভারতের খুবই সুসম্পর্ক আছে। তাদের বাণিজ্য বাড়ছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক করতে চান।
চীন সফরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সফরটি খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আয়োজন করা হয়েছে। তাই সেখানে কী কী বিষয়ে আলাপ হবে তা নিয়ে এখনও আলোচনা হচ্ছে।
গ্রামীণ টেলিকম ও স্টারলিংকের চুক্তি নিয়ে জল্পনার প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, এটা অনুমান নির্ভর। স্টারলিংক বাংলাদেশে অপারেশন শুরু করেনি। তারা কার কার সঙ্গে চুক্তি করছে সে বিষয়টাও জানি না। বেসরকারি কোনো কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছে, সেটা স্টারলিংকের বিষয়।