সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবেও পরিগণিত। যাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের আত্ম–উদ্বোধন অতিসমপ্রতি বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করেছেন।
নানামুখী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কথিত ব্যক্তি বা সংস্থার চক্রান্ত–ষড়যন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শেখ হাসিনা দৃঢ়চিত্তে ও নির্ভীক সাহসিকতায় দেশপ্রেমে অত্যুজ্জ্বল ব্রতকে ধারণ করে ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘আমরাও পারি’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক। তিনি আজ সারা পৃথিবীতে সফলতার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীতে জায়গা করে নিয়েছে মর্যাদার অনন্য আসনে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মূল চাবিকাঠি যাঁর হাতে, তিনি হলেন শেখ হাসিনা। আকাশচুম্বি চ্যালেঞ্জ আর একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তিনি ছুটে চলেছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। রচনা করে চলেছেন অগ্রগতির নতুন মাইলফলক। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সাফল্য–গাথা।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্য নিরাপত্তা, সমুদ্র বিজয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, শান্তি চুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, অর্থনৈতিক উন্নতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। জঙ্গিবাদের কারণে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান সংকটে রয়েছে সেখানে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিস্ময় সাফল্য দেখিয়েছেন।’ তাঁর একক সিদ্ধান্তে ও পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ দেশের চলমান আরো কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট জনগণের জন্য উন্মুক্ত হলে দেশে আরো দ্রুত উন্নয়নের জোয়ার বইবে এবং জনগণের জীবন যাত্রার মান বাড়বে বলে সকলের মতো আমরাও আশাবাদী। বলা যায়, উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে তাঁর হাতেই।
অল্প ক’দিন আগে মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে তার অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেছে। সম্প্রতি নর্দার্ন ভার্জিনিয়ার হোটেল রিটজ–কার্লটনের বলরুমে নেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক’র নিবন্ধটি এই মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত হয়। নিবন্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক স্থানে নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
১ মে ২০২৩ ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত যুগান্তকারী বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্য থেকে অনেক দেশ শিক্ষা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। ২ মে ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উদ্ভাবনী পদ্ধতির মাধ্যমে রেকর্ড সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যাপক বিদ্যুতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য দেশটি অন্যদের থেকে আলাদা। বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আমরা দেশটির আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতিকে স্বাগত জানাই। এদেশের ব্যবসা পরিবেশের সংস্কার, করের আওতা বাড়ানো, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, কর্মংসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক ও জলবায়ু অভিঘাতের প্রতি সহনশীলতা বাড়াতে আমার সহায়তা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই অংশীদারত্ব লাখ লাখ বাংলাদেশিকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে এবং এ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করেছে। আঞ্চলিক যোগাযোগ, বন্যা–দুর্যোগ মোকাবিলা, সবুজ, অভিঘাত সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও মাইক্রো–এন্টারপ্রাইজ সেক্টরে কম দূষণকারী এবং আরও জলবায়ু সহনশীল হতে সাহায্য করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মোট ২২৫ কোটি ডলার সহায়তা করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দেশ থেকে ২০১৫ সালে নিম্ন–মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। দেশটি এখন দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর অন্যতম।
এ প্রশংসা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই পাওয়া গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা যেতে পারে, এই সরকারের সাফল্যে অনেক গুণগান লিপিবদ্ধ হয়েছে। তবে এই ঈর্ষণীয় সাফল্যের সঙ্গে যেমন বাড়ছে চ্যালেঞ্জ, তেমনি বাড়ছে ঝুঁকিও। সফলতার সঙ্গে দুষ্কৃতি মহলও নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারপরও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা থেমে থাকার মানুষ নন। তাঁর নেতৃত্বে একের পর এক রচিত হচ্ছে উন্নয়নের সাফল্যগাথা। এই মহাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন। আগামীকাল তাঁর ৭৭তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে তাঁকে অভিনন্দন জানাই।