প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার পলিটিক্সকে পলিসি পলিটিক্সে পরিণত করেছেন

প্রিমিয়ার ভার্সিটির অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন বিশ্বব্যাংক ছাড়াও আমরা চলতে পারি : আজাদী সম্পাদক

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এবং দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অর্জন। তিনি আজ শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, আওয়ামী লীগের নেত্রীই নন, তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে গণমুখী রাজনীতির রোল মডেল হিসেবে নিজেকে ভিন্ন উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পাওয়ার পলিটিক্স’কে ‘পলিসি পলিটিক্সে’ পরিণত করে দেশের উন্নয়ন এবং মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিইসি মোড় ক্যাম্পাসে দুদিনব্যাপী ‘অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের গুণে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মানচিত্রে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হাসিনা মহিউদ্দিন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সাবিহা মুসা ও বোরহানুল হাসান চৌধুরী, ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক প্রমুখ। অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে থাকায় প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য রেমন্ড আরেং। শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই বাংলা হাজার বছর পরাধীন ছিল। এই সুদীর্ঘ সময় অনেক শাসক বাংলাকে শাসন করেছে। এসব শাসক কখনো স্বাধীন, কখনো পরাধীন ছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ কখনো স্বাধীনতা পায়নি, স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার পায়নি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পরে বাংলার পরাধীন মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তিনি বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতা, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া বিধ্বস্ত বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা। আজ আমরা দেখি, তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চলেছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি অভূতপূর্ব উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে চলেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রযুক্তিগত উচ্চ শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জেলাভিত্তিক একটি করে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে শেখ হাসিনার।
ড. অনুপম সেন বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এখানেই যে, এই মহামারির মধ্যেও তিনি অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবৃদ্ধি প্রায় ৫ শতাংশের উপরে রয়েছে। এই মহামারির মধ্যেও শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসোপানে তোলার জন্য যে বিরাট উদ্যোগগুলো গ্রহণ করেছিলেন, সেগুলোকে কেবলমাত্র চলমানই রাখেননি, যথেষ্ট এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বিশাল পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়েছে ৯৪.২৫ শতাংশ, পদ্মাসেতুর রেলসংযোগ ও বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৪৩ শতাংশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৭.২৯ শতাংশ, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি হয়েছে ৪৮.৫৩ শতাংশ, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি হয়েছে ৬৮.৮৫ শতাংশ এবং দোহাজারী-ঘুমধুম ডুয়েলগেজ ট্র্যাক প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৬১ শতাংশ।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বিশ্ব চক্রান্তের ফলস্বরূপ কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালির ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালিকে করেছে লজ্জিত। সেদিন তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশে না থাকায় বেঁচে যান। সেদিন তাঁরা যদি দেশে থাকতেন, বাংলাদেশের মানুুষ আজ তাদের কাণ্ডারি হিসেব শেখ হাসিনাকে পেত না। বাংলাদেশের আজ যে বিস্ময়কর উন্নয়ন তাও সম্ভব হতো না।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য হাসিনা মহিউদ্দিন শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা দেন এবং তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নয়নের বিবরণ দেন।
বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য রেমন্ড আরেং বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন, তা শত বছর পরেও মানুষ স্মরণ করবে।
দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক প্রদর্শনী সম্পর্কে বলেন, একসময় আলোকচিত্র ধারণ অনেক কষ্টকর ছিল। এখন প্রযুক্তি ছড়িয়ে যাওয়ায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে ওঠায় আলোকচিত্র ধারণ করা খুবই সহজ হয়েছে। এটার অবদান শেখ হাসিনা সরকারের। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি মহান নেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর জীবন ও কর্মের ওপর দুদিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রশংসার কাজ করেছে।
নারীর অধিকার ও শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংক টাকা দেয়নি। বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়া শেখ হাসিনা সেই সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বব্যাংক ছাড়াও আমরা চলতে পারি। বিশ্বব্যাংক ছাড়াও আমরা উন্নয়ন করতে পারি। এই যে ‘করতে পারি’র স্পৃহা, সেটিই আমাদের গৌরবের।
ভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক বলেন, দারিদ্র হচ্ছে সমস্ত শোষণের, সমস্ত বঞ্চনার মূল বিষয়। বাংলাদেশ একসময় দরিদ্র ছিল, তার অর্থনীতি ছিল ভঙ্গুর। সেই দরিদ্র দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। বস্তুত এখন তিনিই বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি।
ড. মোহীত উল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু গণমানুষের নেতা ছিলেন। শেখ হাসিনাও তাঁর পিতার মতো গণমানুষের নেতা, ত্যাগী নেতা ও মানবতাবাদী নেতা। পার্বত্য শান্তি চুক্তি, কক্সবাজারে লাখ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় তাঁর মানবতাবাদী নেতৃত্বের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এ রকম নেতার জন্ম সবসময় হয় না।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন রাউজানে মানবিক কর্মসূচি
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা