প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের আ. লীগ নেতারা কে কী বললেন

শুকলাল দাশ | বৃহস্পতিবার , ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামকক্সবাজাররাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শীর্ষ নেতারা গতকাল সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যান। সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার নেতাদের উদ্দেশ্যে সূচনা বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, উত্তর জেলা, কক্সবাজার এবং রাঙামাটি জেলাসহ সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডসহ স্থানীয় এমপিদের সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী চট্টগ্রামে যুগান্তকারী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দেশের উন্নয়নঅগ্রযাত্রায় যে ভূমিকা রেখেছেনতাতে চট্টগ্রামকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এজন্য চট্টগ্রামবাসী আজীবন আপনাকে কৃতজ্ঞ চিত্রে স্মরণ করবেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ মারা যাওয়ায় জেলা কমিটি দিতে দেরী হওয়ায় বিষয়টি দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। এসময় প্রধানমন্ত্রী যথাশীঘ্র কমিটি জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান জেলার একটি সাংগঠনিক রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। একই সাথে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষেনির্মিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম’ শীর্ষক উন্নয়নঅগ্রযাত্রা ও অগ্রগতির উপর ‘তথ্যচিত্র’ এবং ঈদকার্ড প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীএবার আমাকে একটু দেখবেন। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকবর্তমান কমিটির সহসভাপতি ফরিদুল আলম আগামী নির্বাচনে চন্দনাইশসাতকানিয়া আসনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরু বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি আমাদের স্থানীয় এমপি ফেসবুকে আমাদের এক কেন্দ্রীয় নেতা সম্পর্কে শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য রেখেছেন। আমাদের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আমিন ভাই এবং বিপ্লব বড়ুয়া সাতকানিয়ালোহাগাড়ার সন্তান। তারা এলাকায় গিয়ে সরকারি এবং দলীয় কর্মকণ্ডে অংশ নিলে কোনো প্রকল্প উদ্বোধন করলে এমপি সাহেব তার বিষোদগার করেন।’

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন করিব বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে অনেক দেরী হয়েছে। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব আসছে না। এই উপজেলায় সম্মেলন হওয়া দরকার।

সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টারের ছেলে নাদিম শাহ আলমগীর আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন।

এসময় কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যারা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করেছেনতাদেরকে আপনি ক্ষমা করে দিচ্ছেন। তারা ক্ষমা পেয়ে আবার দলের বিরুদ্ধে গিয়ে অবস্থান নিবে। দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করবে। দলের প্রার্থী পরাজিত হবে।’ তিনি বিদ্রোহীদের ক্ষমা না করার জন্য অনুরোধ জানান।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের পদ বঞ্চিত বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে আগের কমিটির ত্যাগী ২২ জন নেতাকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানান।’ এসময় প্রধানমন্ত্রী কেন দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দেয়া হলো তা জানতে চান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল
পরবর্তী নিবন্ধদেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী