বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের লালির বাপের বাড়ির আকতার হোসেনের পুত্র কপিল উদ্দিন (৩০)। ২০০৪ সাল থেকে রিকশা চালিয়ে তিনি জীবন নির্বাহ করেন। পরে তিনি চলে যান চট্টগ্রাম শহরে। সেখানে রিকশা চালানোর পাশাপাশি স্বরচিত গান গেয়ে যাত্রীদের মনোরঞ্জন করেন।
চলার পথে তার গান গাওয়ার দৃশ্য একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাকে বাঁশখালীতে এনে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরীসহ অন্যরা তার গান শোনেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার স্বরচিত গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকে একটা বাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গন্ডামারায় তার জন্মস্থান হলেও সেখানে থাকার মতো বাড়ি না থাকায় শহরে একটা ভাড়া বাসায় থাকেন কপিল। এরই প্রেক্ষিতে আজ ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার হিসাবে বাঁশখালীর ১২০ পরিবারকে নতুন ঘর ও ২ শতক জায়গার দলিল হস্তান্তর করা হবে। এতে চাম্বলের পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে আধুনিক ডিজাইনে নির্মিত বাড়ি পাবেন রিকশা চালক কপিল উদ্দিন। গতকাল সকালে বাঁশখালী উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী সাংবাদিকদের নিয়ে নতুন গৃহ হস্তান্তরের ব্যাপারে মতবিনিময় করেন।
এ সময় সাংবাদিকদের সামনে গান গেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পাওয়া কপিল বলেন, আমার বাড়ি গন্ডামারা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড লালির বাপের বাড়ি এলাকায়। আমার পিতা আকতার হোসেন, মাতা নাছিমা আকতার। সংসারে স্ত্রী মরিয়ম খাতুন, ছেলে মো. ইয়াছিন (৬), মো. হাসান (৫) ও মেয়ে আয়শা বেগমকে (৪) নিয়ে রিকশা চালিয়ে জীবন নির্বাহ করি। নিজের রিকশা নেই, ভাড়া রিকশা চালাতে হয়। মনের শান্তির জন্য স্বরচিত গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকি।
তিনি জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গান রচনা করেছেন তিনি। নতুন ঘর পাবেন শুনে তিনি আনন্দিত। বলেন, আমাকে নতুন ঘর দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। এখন থেকে আমার একটা নিজস্ব ঠিকানা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় ১২১৬ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করা হবে। এর মধ্যে বাঁশখালীতে ১২০টি, পটিয়ায় ৮৫টি, কর্ণফুলীতে ১০টি, আনোয়ারায় ১৩০টি, বোয়ালখালীতে ৪৫টি, চন্দনাইশে ৬৫টি, সাতকানিয়ায় ২৮টি, লোহাগাড়ায় ১৪৫টি, রাঙ্গুনিয়ায় ৭০টি, রাউজানে ৫৬টি, হাটহাজারীতে ২৪টি, ফটিকছড়িতে ৩৯০টি, সীতাকুণ্ডে ২৮টি ও মীরসরাইয়ে ২০টি ভূমিহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করা হবে।