টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলার যুক্তিতর্ক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আগামী ২৭ জুলাই ঘোষিত হবে রায়। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ শুনানি শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
দুদক পিপি মাহমুদুল হক আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৪ জুলাই এ মামলার যুক্তিতর্ক কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সেদিন শুনানি হয়নি। আজকের (গতকাল) জন্য দিন ধার্য করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং যুক্তিতর্ক কার্যক্রম সমাপ্ত হয়। আগামী ২৭ জুলাই রায় প্রদান করা হবে। আদালত সূত্র জানায়, প্রদীপ চুমকির এ মামলায় গত ২০ জুন রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক এবং গত ১২ জুন সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। এর আগে গত ৬ জুন প্রদীপ-চুমকিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হয়। এ সময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তারও আগে গত ২৯ মে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আসামি পক্ষের আইনজীবীর জেরা করার মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়। মামলায় মোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৪ জন।
দুদকের এ মামলায় শুরু থেকে পলাতক থেকে গত ২৩ মে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ। আদালত এ আবেদন নাকচ করে দিয়ে ওইদিন তাকে কারাগারে পাঠায়। অন্যদিকে মামলার প্রধান আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনার পর থেকে কারাগারে আছেন। টেকনাফের মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলে পরে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক, চট্টগ্রাম কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে প্রদীপ চুমকির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটির তদন্তও করেন দুদক কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ২৮ জুলাই প্রদীপ-চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে তিনি চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বলা হয়, সম্পদ বিবরণীতে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অর্জন এবং হস্তান্তরের অপরাধ করেছেন প্রদীপ-চুমকি। নগরীর পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে সেমিপাকা ঘর, ৪৫ ভরি সোনার গয়না, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস এবং কঙবাজারে ফ্ল্যাট রয়েছে প্রদীপের, অভিযোগপত্রে এসবও উল্লেখ করা হয়।