নতুন বছরে বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই হয়েছে। টাইগারদের শুরুর ধাক্কার পর সামলে নিয়েছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। সেঞ্চুরিতে ডেভন কনওয়ে প্রতিরোধ গড়েছিল। কিন্তু তৃতীয় সেশনে কনওয়েসহ তিন উইকেট তুলে নেওয়ায় বিকেলের শেষটা নিজেদের করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। সফরকারীরা শেষটা স্বস্তিতে করলেও প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ভালো অবস্থানে রয়েছে কিউইরা। প্রথম ইনিংসের প্রথম দিনে ৫ উইকেটে করেছে ২৫৮ রান। অবশ্য এ রিপোর্ট যখন পাঠকরা পড়বেন তখন দ্বিতীয় দিনের খেলার অনেক অংশই তাদের জানা হয়ে যাবে। প্রথম দিন শেষে টাইগারদের আশা দ্বিতীয় দিনেও তারা ভালো কিছু করতে পারবেন।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। টস জেতার পর নতুন বছরে উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষাও করতে হয়নি। শরিফুলের হাত ধরে আসে প্রথম উইকেট। এই পেসারের বলে ২০২২ সালের প্রথম দিনে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে খেলতে নামা সফরকারীরা চতুর্থ ওভারেই উইকেট উদযাপন করে। বল ল্যাথামের ব্যাটের কানায় লেগে গেলে ঝাঁপিয়ে এক হাতে দেখার মতো এক ক্যাচ নেন উইকেটকিপার লিটন। ফেরার আগে ল্যাথাম করেন মাত্র ১ রান। স্বাগতিকদের চেপে ধরার ভালো সুযোগ তৈরি হয়ে যায় তাতে। সবুজ উইকেটে তাসকিন আহমেদ-এবাদত হোসেন-শরিফুলদের সামনে কঠিন পরীক্ষাতেও পড়েন দুই ব্যাটার কনওয়ে ও ইয়াং। মুখোমুখি ১৩তম বলে গিয়ে প্রথম রানের দেখা পান কনওয়ে। আর ইয়ং রানের খাতা খোলেন ২২তম বলে গিয়ে। ওপেনিংয়ে নেমে এই ব্যাটার প্রথম রান পান ইনিংসের দশম ওভারে। যদিও ওই কঠিন সময় কাটিয়ে কিউইদের শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায় কনওয়ে-ইয়াং জুটি। চলতে থাকে বাংলাদেশের বোলারদের পরীক্ষা। কিছুতেই ভাঙা যাচ্ছিল না তাদের জুটি। প্রথম সেশনে একটিই সাফল্য ছিল। দ্বিতীয় সেশনে অবশেষে রান আউট আশীর্বাদ হয়ে আসে সফরকারীদের জন্য। দ্রুত সিঙ্গেল নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন ইয়াং। নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রোতে লিটন বেল ফেলে দিলে ইয়ংয়ের আউটের সঙ্গে ভাঙে কনওয়ের সঙ্গে তার ১৩৮ রানের জুটি। ফেরার আগে অবশ্য হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন এই ওপেনার। ১৩৫ বলে ৬ বাউন্ডারিতে করেন ৫২ রান। তার পরেও নিউজিল্যান্ডকে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন ডেভন কনওয়ে। বছরের প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশ করেছেন প্রায় তিনটি সেশন। তৃতীয় সেশনে সেই সেঞ্চুরিয়ানকে ফিরিয়েছেন বল হাতে দেখা না যাওয়া পার্টটাইমার স্পিনার অধিনায়ক মোমিনুল হক। তার কল্যাণেই ভাঙা গেছে কনওয়ে-প্রতিরোধ। অথচ প্রতিষ্ঠিত স্পিনার মেহেদী মিরাজ কোনও উইকেটই পাননি সারাটা দিন।
বছরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান কনওয়ের ফেরার জন্য দায়টা অবশ্য তারই। বামহাতি মোমিনুলের বলটা ছিল পুরোপুরি নির্বিষ। কিন্তু অলস ভঙ্গিতে গ্ল্যান্স করতে গিয়ে লিটনের গ্লাভস বন্দি হয়েছেন তিনি। ২২৭ বল খেলা কনওয়ে ফিরেছেন ১২২ রানে। তাতে ছিল ১৪টি চার ও ১ টি ছয়। কনওয়ে ফেরার আগে সাজঘরে ফিরেছেন রস টেলর। উইল ইয়াং ফেরার পর বিদায়ী সিরিজ খেলতে মাঠে নেমেছিলেন। তখন টেলর-কনওয়ে জুটি পোক্ত হওয়ার পথেই ছিল। যোগ করে ফেলেছিল ৫০ রান। কিন্তু শরিফুলের দুর্দান্ত এক বলে টেলরের ক্যাচ উঠলে কভারে সেটি লুফে নেন সাদমান। তার পর হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি। দিনের শেষ বলে এবাদতের বলে ফিরেছেন টম ব্লান্ডেল। তার বিদায়ে শেষটা অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের। এবাদতের বলটা ঠিকমতো খেলতে পারেননি কিউই ব্যাটার। বল মাটিতে পড়ার পর পায়ের ভেতর দিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। তাতে ১১ রানে ফিরেছেন ব্লান্ডেল। আজ রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে দিনের খেলা শুরু করবেন হেনরি নিকোলস। তিনি ব্যাট করছন ৩২ রানে।
টেস্ট এবং বছরের প্রথম দিন শরিফুল ৫৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। ৫৩ রানে একটি উইকেট নেন এবাদত। ৫ রানের বিনিময়ে অপর উইকেট নেন অধিনায়ক মোমিনুল।