প্রথম দিন টিসিবির পণ্য কিনলেন ৪৩ হাজার ৭১৩ জন

ফ্যামিলি কার্ড না থাকা অনেকে এসে ফিরে গেছেন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২১ মার্চ, ২০২২ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের নেওয়া উদ্যোগের প্রথম ধাপে টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামে গতকাল ষোলশহর সামারা কনভেনশনে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পরে সামারা কনভেনশনসহ নগরী ও উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গতকাল প্রথম দিনে নগর, উপজেলা ও পৌরসভার ৪৩ হাজার ৭১৩ জন ফ্যামিলি কার্ডধারী মানুষ টিসিবির পণ্য ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে নগরীর ২৪ হাজার
জন, বাকিরা উপজেলার। দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই কেজি চিনি ক্রয়ে প্রতি কার্ডধারীকে পরিশোধ করতে হয়েছে ৪৬০ টাকা।
জেলা প্রশাসন সূত্র আরো জানায়, প্রথম ধাপের প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছে ৮৭ হাজার ৪২৬ কেজি চিনি, ৮৭ হাজার ৪২৬ কেজি মসুর ডাল ও ৮৭ হাজার ৪২৬ লিটার সয়াবিন তেল।
এদিকে টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়েছে এমন কয়েকটি সেন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, ফ্যামিলি কার্ড নেই এমন অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করা হয়নি। তারা বলছেন, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে শুনে লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু কার্ড না থাকায় পণ্য কিনতে পারিনি। আমাদেরকে তো কার্ড দেয়া হয়নি। কার্ডের কথা কেউ বলেননিও।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য হচ্ছে, এই কার্যক্রম শুধুমাত্র কার্ডধারীদের জন্য। কার্যক্রম পরিচালনায় জেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ট্যাগ টিম জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে উপকারভোগী নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকৃত যাদের উপকারভোগী মনে হয়েছে তাদেরকেই এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
কর্ণফুলী, ষোলশহরসহ বেশ কয়েকটি বিক্রয় সেন্টার পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বলেন, রেশন কার্ড বিতরণসহ পুরো কার্যক্রমে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সংক্রান্ত বিষয় তদারকি করছেন ৬ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সারা দেশের মতো নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড, ১৫টি উপজেলা ও ১৫টি পৌরসভায় গতকাল টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ৮৪টি ডিলারের হাত ধরে উপকারভোগীদের কাছে যাচ্ছে এ সেবা। এ কার্যক্রম দুই ধাপে চলবে। প্রতি ধাপে চট্টগ্রামের ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮২ জন ফ্যামিলি কার্ডধারীর কাছে পণ্য বিক্রি করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে কার্যক্রম। প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ হবে আগামী ৩০ মার্চ। এরপর রমজানের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ধাপের কার্যক্রম শুরু হবে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, জেলার ১৫ উপজেলা, পৌরসভা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে প্রথম ধাপের ১ হাজার ৭০ টন মসুর ডাল, ১ হাজার ৭০ টন চিনি এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ১৭০ লিটার সয়াবিন তেল পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর জন্য বরাদ্দ ৬০১ টন চিনি, ৬০২ টন মসুর ডাল ও ৬ লাখ ১ হাজার ২৬ লিটার সয়াবিন তেল দেয়া হবে। বাকি খাদ্যপণ্য উপজেলা ও পৌরসভার কার্ডধারীদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮২ জন রেশন কার্ডধারীর মধ্যে নগরীর রয়েছে ৩ লাখ ৯৬৩ জন, বাকি ২ লাখ ৩৪ হাজার ১১৯ জন উপজেলা ও পৌরসভার বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় টিসিবি সারা দেশে এক কোটি নিম্নআয়ের মানুষের নিকট ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সামগ্রী বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুফতি ইজহারের দুই বছরের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে রেলের জায়গায় ৩০ হাজার অবৈধ ঘর