দেশের অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত লাইটারেজ জাহাজ চলাচলে শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে একই সিরিয়ালে জাহাজ চলাচলের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। গতকাল মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্টের মুখ্য কর্মকর্তার (পিও এমএমডি) কার্যালয় থেকে একই সিরিয়ালে জাহাজ বরাদ্দ দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে গতকাল প্রথম দিনে শুধুমাত্র একটি জাহাজ বরাদ্দ হয়েছে। পাল্টা পাল্টি অবস্থান নেয়া দুইটি গ্রুপের একপক্ষ জাহাজ বরাদ্দ দিলেও অপরপক্ষের পণ্যের এজেন্টদের কেউ বৈঠকে যাননি। ফলে শেষতক একই সিরিয়ালে জাহাজ বরাদ্দের কার্যক্রম কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর এবং বহির্নোঙর থেকে দেশের অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত প্রায় ১৮শ’ জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজের মাধ্যমে বছরে অন্তত দশ কোটি টনের মতো পণ্য পরিবহন করা হয়। লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল শিপ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অব চিটাগাং (আইভোয়াক) নামের তিনটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) বিশাল এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করে আসছিল। সম্প্রতি ডব্লিউটিসির তিন সংগঠনের মধ্যে আইভোয়াকের সাথে অপর দুইটি সংগঠনের বিরোধ তুঙ্গে উঠে এবং তারা ডব্ল্িউটিসি থেকে বের হয়ে আলাদা সেল গঠন করে জাহাজ বরাদ্দ এবং পণ্য পরিবহন শুরু করে। এতে করে একদিকে ডব্লিউটিসি জাহাজ বরাদ্দ দিচ্ছিল অপরদিকে আইভোয়াক জাহাজ বরাদ্দ দিচ্ছিল। দুইটি সেল থেকে আলাদা আলাদা জাহাজ বরাদ্দ দেয়ায় একটি বিশৃংখল পরিস্থিতি তৈরির আশংকা করা হয়। বিষয়টি নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পর্যন্ত গড়ায়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক থেকে চট্টগ্রামের নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল অফিসারকে প্রধান করে তিন সংগঠনের ছয়জন সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। ওই কমিটিকে জাহাজ পরিচালনার ব্যাপারটি ঠিকঠাক করে একই সিরিয়ালে লাইটারেজ জাহাজ পরিচালনা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। উক্ত কমিটি গত ১৬ জানুয়ারি নৌ বাণিজ্য দপ্তরে বৈঠক করে। উক্ত বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে গতকাল থেকে একই সিরিয়ালে জাহাজ বরাদ্দ দেয়ার কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। পূর্বঘোষিত সময়ানুযায়ী গতকাল বিকেলে পিও এমএমডির কার্যালয়ে বার্থিং মিটিং আহ্বান করা হয়। এতে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নেতৃবৃন্দসহ ডব্লিউটিসির পক্ষের পণ্যের এজেন্ট ও লোকাল এজেন্টেরা অংশ নিলেও আইভোয়াকের পক্ষের কোনো পণ্যের এজেন্ট যোগ দেয়নি। তবে আইভোয়াকের সভাপতি হাজী সফিক আহমদ, কোষাধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক এবং মুখপত্র পারভেজ আহমেদ পিও এমএমডির কার্যালয়ে গেলেও তারা কোনো জাহাজ বরাদ্দ দেননি। এতে করে শুধুমাত্র ডব্লিউটিসির পক্ষে শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর একটি জাহাজ বরাদ্দ দেন। তিনি স্ক্র্যাপ পরিবহনের জন্য জাহাজটি বরাদ্দ দিয়েছেন।
আইভোয়াকের পক্ষ থেকে কোন জাহাজ বরাদ্দ না দেয়া প্রসঙ্গে সংস্থার মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বলেন, আমাদের যারা বেশি জাহাজ বরাদ্দ দেয় তারা দেশে নেই। তাই জাহাজ বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়নি।
ডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আমরা সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা বৈঠকে ছিলাম। জাহাজও বরাদ্দ দিয়েছি। আজ একটি জাহাজ বরাদ্দ দিলেও ক্রমে আমাদের জাহাজের সংখ্যা বাড়বে।








