চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য ৯ কন্টেনারে ১৭৫ টন পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংসের তালিকায় ছিল হিমায়িত চিংড়ি, আদা ও মেন্ডারিন। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন চট্টগ্রাম বন্দর রিপাবলিক ক্লাবের পিছনের খালি জায়গায় পণ্য ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হয়। ধ্বংস কার্যক্রমে সহায়তা করছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশন। পর্যায়ক্রমে প্রাণী খাদ্য, হিমায়িত মাংস, মেন্ডারিন, মিট অ্যান্ড বোন মিল, মাছ ও মুরগির খাদ্যসহ মোট ১১১ কন্টেনার পণ্য ধ্বংস করা হবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস ও অখালাসকৃত পণ্য দ্রুত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে বন্দরের ইয়ার্ড খালি করার উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেই ধারাবাহিকতায় ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয় কাস্টমস কর্তারা। কাস্টমস থেকে গঠিত ৯টি টিমের মাধ্যমে করা হচ্ছে স্পেশাল ইনভেন্ট্রি। ইতোমধ্যে ৫২৪ লটে ১ হাজার ৩২৪ কন্টেনার ইনভেন্ট্রির জন্য ইনডেন্ট দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৪১২ লটে ১ হাজার ৪৮ কন্টেনারের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, নিলাম অযোগ্য পণ্য বন্দরের জন্য একটি বিশাল সমস্যা। অনেক সময় আইনি জটিলতায় নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করতে পারে না কাস্টমস। ফলে বন্দর ইয়ার্ডে এসব কন্টেনারের জন্য জট লেগে যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে বন্দরে পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য ১৭৫ টন বিভিন্ন পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস ছাড়া আমাদের নিলাম কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ নভেম্বর তিনদিনে ২১ কন্টেনারে আদা, পেঁয়াজ, মাল্টা, মেন্ডারিন এবং ড্রাগন ধ্বংস করা হয়।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। অন্যদিকে আমদানিকারক যথাসময়ে পণ্যভর্তি কন্টেনার খালাস না করলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে পচনশীল পণ্যভর্তি কন্টেনার একটি বড় সমস্যা। খালাস না হওয়া এসব কন্টেনার শিপিং কোম্পানির জন্যও বিপদের। কারণ এসব কন্টেনারে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হয়। আমদানিকারক খালাস না নিলেও বৈদ্যুতিক সংযোগ চাইলেও বিচ্ছিন্ন করা যায় না।