মালয়েশিয়ার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দেশটিতে ঢুকতে না পারা বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে প্রথম দফায় প্রায় আট হাজার জন যাবে বলে তথ্য দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, ৭ হাজার ৯৬৪ জন কর্মীকে প্রথম পর্যায়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে যাচাই–বাছাই শেষ হওয়া এসব কর্মী কবে নাগাদ গিয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন, সে নিয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি। খবর বিডিনিউজের।
২০২৪ সালে নতুন–পুরাতন বিদেশি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ৩১ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিমানের টিকেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে ওই সময়ের মধ্যে যেতে পারেননি প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যেতে না পারা এই কর্মীদের নিতে মালয়েশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিল বাংলাদেশ।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অক্টোবরে ঢাকা সফরে এসে ওই কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
এরপর দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়ার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ক্রমে মালয়েশিয়ার রেফারেন্সের আওতায় শ্রমিকদের আনার জন্য মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট টেকনিক্যাল গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব করেন।
সে প্রস্তাব অনুযায়ী গঠিত জয়েন্ট টেকনিক্যাল গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা তুলে ধরে রফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রদত্ত ১৭ হাজারের বেশি আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের তালিকার প্রেক্ষিতে, মালয়েশিয়ার পক্ষ তাদের প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সাথে তথ্য যাচাই করে প্রাথমিকভাবে ৭ হাজার ৯৬৪ জন শ্রমিকের একটি তালিকা সম্পর্কে অবহিত করে, যাদের তারা প্রথম পর্যায়ে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরও মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা গত বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। সড়কে ব্যাপক যানজটের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।
এরপর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ভিসাসহ সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত থাকার পরও মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার কর্মীকে আগামী মার্চ–এপ্রিলের মধ্যে পাঠানোর চেষ্টা চলছে। ওইদিন তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমরা আবার কথা বলব। তবে প্রাথমিকভাবে তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে শুধু ‘ফেইজ বাই ফেইজ’ হবে। যেভাবে আলোচনা চলছে আমরা আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যে এটি করতে পারব। মার্চ–এপ্রিলের মধ্যে এটি সম্ভব হবে। এখন সব কিছু নির্ভর করছে মালয়েশিয়ার ওপর। তারা যদি বলে ১৫ দিনের মধ্যে লোক নেবে, তাহলে আমরাও ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে প্রস্তুত।