জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ৮৫৮ জন নিহত এবং সাড়ে ১১ হাজার আহত ব্যক্তির প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। গতকাল শনিবার এ বিশেষ সেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব খন্দকার জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
এ তালিকার খসড়া চূড়ান্ত করতে খসড়া তালিকা দুটি আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের ওয়েবসাইটে
(https://musc.portal.gov.bd) এটি পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা তথ্যে দেখা যায়, এ তালিকায় ৮৫৮ জন নিহতের নাম এবং আহতদের তালিকায় ১১ হাজার ৫৫১ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাইয়ের শেষ দিকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে রূপ নেয়। ছাত্র–জনতার এ গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান। এর আগে এ আন্দোলন দমাতে গিয়ে ব্যাপক সহিংসতা ঘটনা ঘটে। এত বিপুল হতাহত হয়।
সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে হতাহতের এ তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়। পরে জুলাই–আগস্টে নিহত এবং আহতদের তালিকা তৈরি করতে ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৭১৭ জনের নিহতের তালিকা প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম–এমআইএস।
তখন গণবিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বলেছিল, সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদদের’ মধ্যে যদি কারো নাম এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকে তাহলে শহীদ পরিবারের সদস্য, ওয়ারিশ, প্রতিনিধিদের উপযুক্ত প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তবে ২৮ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ–কমিটি আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সংখ্যা আর বেশি বলে দাবি করে। সেদিন বলা হয়, আন্দোলনে ১৫৮১ জন নিহত হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল গতকাল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, শহীদ বা আহত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ৬৪টি জেলায় গঠিত জেলা কমিটি এবং গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল কাজ করছে। বিশেষ সেলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকাশিত খসড়া তালিকা দুটিতে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য যাচাই, সংশোধন ও চূড়ান্ত করতে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য, ওয়ারিশ, প্রতিনিধিদের মতামতের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া এই তালিকার বিষয়ে কারো কোনো মতামত বা পরামর্শ থাকলে অথবা সংযোজন–বিয়োজন করার মতো কোনো তথ্য থাকলে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের ইমেইলে (muspecialcell36@gmail.com) জানাতে বলা হয়েছে।