স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরুর পর প্রথম আট ঘণ্টায় দুই প্রান্ত দিয়ে ১৫ হাজার ১৬২টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন টোল দিয়ে সেতু পার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। সবার জন্য সেতুর দুই প্রান্তের ১৪টি টোল গেট খুলে দেওয়া হয় গতকাল রাববার সকাল ৬টায়।
সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন জানান, বেলা ২টা পর্যন্ত ওই প্রান্ত দিয়ে ঢাকার দিকে গেছে ৬ হাজার ৭৬২টি যানবাহন, তাতে টোল উঠেছে ৩৫ লাখ ৯ হাজার ২৬০ টাকার। এই আট ঘণ্টায় মাওয়া প্রান্তে টোল দিয়ে ৮ হাজার ৪০০ যানবাহন দক্ষিণাঞ্চলের দিকে গেছে বলে এ প্রান্তের টোল ম্যানেজার হাসিবুর রহমান জানিয়েছেন। মোট আয় হয়েছে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। খবর বিডিনিউজ ও বাসসের।
৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। এই ২১টি জেলার মাওয়া রুট ব্যবহারকারী বাসসহ যানবাহনগুলো এতদিন ফেরিতে পারাপার হতো। গতকাল সকাল থেকে সবার জন্য সেতু খুলে দেওয়ার কথা থাকায় প্রথম যাত্রার অভিজ্ঞতা স্মরণীয় করে রাখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। সে কারণে অনেকেই মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন বাহন নিয়ে রাতে এসে অপেক্ষা করছিলেন সেতুর দুই প্রান্তে। ভোরের দিকে মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের দীর্ঘ কিউ তৈরি হয়ে যায়।
পদ্মা সেতুতে হেঁটে ওঠা কিংবা গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা বারণ থাকলেও প্রথম দিনে মানুষের উচ্ছ্বাসে ভেসে যায় সেসব বিধিনিষেধ। খোলার পরপরই মানুষ হামলে পড়ে সেতুর উপর দিয়ে যেতে। হেঁটে কাউকে উঠতে না দিলেও মোটর বাইক কিংবা গাড়ি নিয়ে উঠে অনেকেই সেতুর উপর গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলায় মেতে ওঠেন। বাস থামিয়েও নেমে পড়েন যাত্রীরা। এই পরিপ্রেক্ষিতে সেতু কর্তৃপক্ষ গতকাল গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিধিনিষেধের কথা আবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ সেতুর উপর গাড়ি থামানো বন্ধে তৎপরও হয়েছে।
এদিকে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টিকিট কেটে প্রথম পার হয়েছেন আমিনুল ইসলাম (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী। এসেছেন ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে।
অপরদিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এতদিন ছিল সরগরম। কিন্তু গতকালের চিত্র পুরোটাই উল্টো। শিমুলিয়া মাঝিরকান্দি রুটে সকাল থেকে কোনো ফেরি ছেড়ে যায়নি বা মাঝিরকান্দি থেকেও শিমুলিয়া ঘাটে কোনো ফেরি আসেনি। এতদিন এই ঘাট দিয়ে ওই অঞ্চলের যাত্রীরা লঞ্চ, স্পিডবোট বা ফেরি করে পাড়ি দেয় উত্তাল পদ্মা।