বিছানায় শুয়ে আছেন ২১ বছরের তরুণী মিয়া শেম, ডান হাতে লম্বা কাটা দাগ, পাশ থেকে ওই হাতে ব্যান্ডেজ পরিয়ে দিচ্ছেন একজন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি এই তরুণীর এমন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে প্রায় দুইশ ব্যক্তিকে ধরে নেওয়ার পর সোমবার প্রথমবার এমন ভিডিও প্রকাশ করে হামাস। খবর বিডিনিউজের।
সিএনএন জানিয়েছে, কয়েক সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ফরাসি–ইসরায়েলি ওই তরুণীকে কথা বলতেও দেখা যায়। তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। কথা বলার সময় বাইরে শোনা যাচ্ছিল হৈ–চৈ। মিয়া শেম বলেন, তিনি আহত হয়েছেন। গাজায় নেওয়া হয়েছে তাকে। পরিবারের কাছে ফেরারও আকুতিও জানান তিনি।মঙ্গলবার তেল আবিবে মিয়া শেমের মা কেরেন স্কার্ফ শেম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে সরকার ও বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
মেয়ের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে বিশ্বের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। সে কেবল বিনোদনের জন্য একটি উত্সবে যোগ দিয়েছিল। এখন গাজায় আছে। সেখানে কেবল আমার মেয়েই নয়, আরও অনেকে আছে। সে বেঁচে আছে না মারা গেছে, সোমবারের পর থেকে আমি নিশ্চিত নই। শুধু জানি, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি দেখেছিলাম সে বেঁচে আছে। শুনেছিলাম, তার কাধে বা পায়ে গুলি লেগেছে। পরে দেখি তার কাধে গুলি করা হয়েছে। তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাকে বীভৎস দেখাচ্ছিল।
ভিডিওটি কোথায় এবং কখন ধারণ করা হয়েছে, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) বলছে, গত সপ্তাহে পরিবারের কাছ থেকে মিয়া শেমকে অপহরণের খবর তারা পেয়েছে।
আইডিএফের মুখপাত্র লিবি ওয়েইস মঙ্গলবার সিএনএনকে বলেন, ভিডিওটি ইসরায়েলের জনগণের ওপর হামাসের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালানোর একটি কৌশল।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে হঠাৎ আক্রমণ চালায় হামাস। ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে লোকজনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। ঠিক কতজনকে ধরে নেওয়া হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়।
হামাসের আল–কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইয়দা সোমবার এক ভিডিও বার্তায় জানান, সেই সংখ্যা হতে পারে ২০০–২৫০ এর মধ্যে।
তিনি জানান, আল–কাসাম ব্রিগেড ২০০ জনকে জিম্মি করেছে। বাকিদের অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠন জিম্মি করেছে। সঠিক সংখ্যা বলতে পারেননি তিনি। তবে সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, অন্তত ১৯৯ জনকে গাজায় ধরে নেওয়া হয়েছে।