প্রথমবার আদি মহাবিশ্ব ‘স্লো মোশনে’ দেখলেন বিজ্ঞানীরা

| বুধবার , ৫ জুলাই, ২০২৩ at ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

প্রথমবারের মতো মহাবিশ্বের আদি অবস্থা ‘এঙট্রিম স্লোমোশনে’ পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মহাবিশ্বে ‘কোয়াসার’ নামে পরিচিত বিশালাকারের উজ্জ্বল বস্তুর ডেটা ব্যবহার করে এটি সম্ভব করেন গবেষকরা। এগুলো পৃথিবী থেকে এতটাই দূরে, এত উজ্জ্বল আর বিশাল যে জ্যোতির্বিদরা এগুলোকে ‘বাতিঘর’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

কোনো কোয়াসারের আলো মহাবিশ্বের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করার সময় নক্ষত্র থেকে শুরু করে ছায়াপথসহ সবকিছুরই ইতিহাস তুলে নিয়ে আসে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা প্রায় দুই দশক ধরে ১৯০টি কোয়াসার পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং এ থেকে পাওয়া ডেটা নিয়ে কার্যত ‘মহাবিশ্বের ঘড়ি’ বানানোর চেষ্টা করেছেন, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে তুলনা করা চলে টিকটিক করে চলা ঘড়ির কাঁটার ধাপের সঙ্গে। টেলিস্কোপে দেখতে পাওয়ার আগে এইসব কোয়াসারের আলো কয়েকশ কোটি বছর মহাকাশ ভ্রমণ করেছে, যেগুলো গবেষণা দলকে মহাবিশ্বের শুরুর সময়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ। খবর বিডিনিউজের।

এই পুরো প্রক্রিয়া আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে বলা হয়েছে, কীভাবে স্থান ও কাল ভেদে সময় ভিন্নভাবে প্রবাহিত হয়। এর মানে দাঁড়ায়, কোনো ব্যক্তির কাছে একটি সময় ঘটে যাওয়া ঘটনা অন্যের জন্য ভিন্ন সময়ে ঘটতে পারে। এর ফলে, দূরের বা প্রাচীন মহাবিশ্বের সময় বর্তমান সময়ের তুলনায় ধীরগতিতে চলা উচিৎ।

ইউনিভার্সিটি অফ সিডনি’র অধ্যাপক গেরেন্ট লুইস বলেন, আইনস্টাইনের কল্যাণে আমরা জানি যে সময় ও স্থান একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আর সময়ের শুরুতে ‘বিগ ব্যাং’এর একক বিন্দু থেকে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের মানে দাঁড়ায়, আদি অবস্থার মহাবিশ্বে সময় বর্তমানে প্রবাহিত সময়ের তুলনায় অনেক ধীরগতির। এই গবেষণায় বিং ব্যাং ঘটার প্রায় একশ কোটি বছর পরের ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি আমরা।

লুইস বলেন, প্রায় এক হাজার তিনশ ৮০ কোটি বছর আগের বিগ ব্যাং ঘটার পরপরই মহাবিশ্বে সময় বর্তমান সময়ের এক পঞ্চমাংশ গতিতে প্রবাহিত হয়েছে। আপনি শুরুর দিকের মহাবিশ্বে থাকলে সেখানে এক সেকেন্ড এক সেকেন্ডই মনে হবে। তবে আমাদের অবস্থান থেকে, মানে এক হাজার দুইশ কোটি বছর পরে এসে ওই এক সেকেন্ড মনে হবে যেন টানছে।

অধ্যাপক লুইস ও তার সহকর্মী ইউনিভার্সিটি অফ অকল্যান্ডের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ড. ব্রেন্ডন ব্রিউয়ার এই অনুসন্ধান প্রকাশ করেছেন ‘নেচার অ্যাস্ট্রনমি’ জার্নালে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখানখানাবাদে অগ্নিকাণ্ডে ৭ বসতঘরের মালামাল পুড়ে ছাই
পরবর্তী নিবন্ধকমছে ভূগর্ভস্থ পানি, পাল্টে যাচ্ছে পৃথিবীর অক্ষ