প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম রেল স্টেশন–ঢাকা ও কক্সবাজার রেল স্টেশনে বসানো হয়েছে রেল যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানিং মেশিন। যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ভ্রমণ এবং রেলযোগে মাদক–চোরাচালান রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সুপারিশে রেলপথ মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামসহ তিন স্টেশনে স্ক্যানিং মেশিনগুলো বসানো হয়েছে। তবে এখনো অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়নি। এই স্ক্যানিং মেশিনগুলো পরিচালনা করবেন স্টেশন মাস্টার, আরএনবি সদস্য, টিকেট কালেক্টররা মিলে। ১৫ জন কর্মচারীকে এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কমার্শিয়াল বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্ক্যানার মেশিনটি স্টেশনে বসিয়েছে। এটির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা (আরএনবি)। শীঘ্রই এটি চালু হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ আমান ও স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ আমান বলেন, যাত্রীদের মালামাল স্ক্যানিংয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে রেলপথ মন্ত্রণালয় স্ক্যানার মেশিনটি বসিয়েছে। এই স্ক্যানার মেশিনের একটি সুবিধা হচ্ছে কোনো প্রকার অবৈধ মালামাল যেমন– মাদক চোরাচালন পণ্য রেলযোগে পরিবহন করতে পারবে না। এটি পরিচালনার জন্য আরএনবিকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। আমাদের থেকে তিনজন সদস্যের নাম চেয়েছে প্রশিক্ষণের জন্য। আমরা নাম দিয়েছি।
চট্টগ্রাম স্টেশনের মাস্টার আবু জাফর মজুমদার বলেন, চট্টগ্রাম, ঢাকা কমলাপুর এবং কক্সবাজার স্টেশনে লাগেজ স্ক্যানিং মেশিন বাসানো হয়েছে। মূলত মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য এই স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে। অপারেশনাল কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। স্টেশন মাস্টার, আরএনবি এবং টিকেট কালেক্টরসহ ১৫ জন কর্মচারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লাগেজ স্ক্যানিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তিনি জানান, এখনো প্রশিক্ষণ শুরু হয়নি। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্ক্যানিং মেশিন বসিয়ে গেছে। প্রশিক্ষণের পর অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত মিয়ানমার কেন্দ্রিক ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের বিশাল বিশাল চালান টেকনাফ–কক্সবাজার হয়ে সারাদেশে বিস্তার ঘটেছে গত দেড়–দুই দশক আগে থেকেই। আগে সড়ক ও নৌপথে এই রুট থেকে সারাদেশে মাদক পাচার হলেও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্থাপন হওয়ায় রেলপথে নিরাপদে মাদক পাচারের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরবর্তীতে কক্সবাজার স্টেশনে স্ক্যানিং মেশিন বসানোর দাবি উঠে। এরই প্রেক্ষিতে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকা কমলাপুর স্টেশনে লাগেজ স্ক্যানিং মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে রেলপথে মাদক পাচার রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।