প্রতি গণ্ডা জমিতে হয় ১শ কেজি পুদিনা

রমজানে চাহিদা বেশি, চন্দনাইশে চাষির ব্যস্ততা

মুহাম্মদ এরশাদ, চন্দনাইশ | রবিবার , ২ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানে বাড়ে পুদিনার পাতার চাহিদা। প্রতিদিনের ইফতারিতে পুদিনা পাতা ছাড়া যেন চলেই না। তাই রমজান মাসকে সামনে রেখে চন্দনাইশের অনেক চাষি এবার পুদিনার চাষ করেছেন। বর্তমানে পুদিনা পাতা প্রতিকেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।

গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার গাছবাড়িয়া বুলারতালুক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা দলবেধে ক্ষেত থেকে পুদিনা তুলছেন। লক্ষ্য আজ রোববার রমজানের প্রথম দিন থেকে বাজারজাত করা। বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে নিজের ক্ষেত থেকে পুদিনা পাতা সংগ্রহের সময় কথা হয় পুদিনা চাষি মো. আরিফুল ইসলাম খোকন ও মোহাম্মদ ইদ্রিচের সাথে। তারা জানান, রমজান মাসকে সামনে রেখে তারা অন্যান্য সবজি চাষাবাদের পাশাপাশি পুদিনা পাতার চাষাবাদ করেন। চলতি বছর আরিফুল ইসলাম ৫ গন্ডা ও ইদ্রিস প্রায় ২ কানি পরিমাণ জমিতে পুদিনা পাতা চাষ করেছেন। তারা জানান, প্রতি গন্ডা জমিতে পুদিনা পাতা চাষাবাদে খরচ পড়ে ৫ হাজার টাকা। প্রতি গন্ডাতে ১০০ কেজিরও বেশি পুদিনা পাতা বিক্রি করা যায়। সে হিসেবে গন্ডা প্রতি ৫ হাজার টাকার উপরে লাভবান হন তারা।

রমজান মাসে বিভিন্ন প্রকারে ভাজা ইফতারিতে যেমন বড়া, চাটনি, সালাদ, বোরহানি বানানোর কাজে পুদিনা পাতা ব্যবহার হয়। এছাড়া চা এবং শরবতেও পুদিনা পাতার ব্যবহার হয়। কৃষকরাও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পুদিনা পাতা গাছের পরিচর্যা ও পুদিনা পাতা উত্তোলন করে বাজারে বিক্রির কাজে। রমজান মাসে প্রতিদিন দুপুর থেকে এলাকার শিশুকিশোরদেরও দেখা যায় পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পুদিনা পাতা বিক্রি করতে।

বুলার তালুক এলাকার অপর কৃষক আবদুল খালেক জানান, তিনিও চলতি বছর ২ কানি জমিতে পুদিনা পাতার চাষাবাদ করেছেন। তিনি জানান, রমজানের শুরু থেকেই পুদিনা পাতার ব্যাপক চাহিদা থাকে। মাঝখানে কিছুটা চাহিদা কমলেও রমজানের শেষ দিকে এসে আবারো বাড়ে পুদিনা পাতার চাহিদা। চন্দনাইশের কৃষকরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই পুদিনা পাতার চাষাবাদ করে আসছেন এবং সফলতা পাচ্ছেন।

কৃষকরা জানান, সকালে দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনের পাইকারি সবজি বাজারে পুদিনা নিয়ে আসেন। দূরদূরান্তের পাইকারি ব্যবসায়ীরা পুদিনা কিনে চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। এছাড়াও স্থানীয় বাজারে খুচরাও বিক্রি করেন তারা।

চন্দনাইশ কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিবাকর দাশ জানান, চলতি রমজানকে সামনে রেখে চন্দনাইশের দোহাজারী, বৈলতলী, হাশিমপুর এলাকায় বেশি পুদিনা পাতার চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। পুরো উপজেলায় ২০ হেক্টরেরও বেশি পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ হয়েছে পুদিনা পাতার। রমজানে পুদিনা পাতার চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকরা দামও ভালো পান। ফলে দিন দিন পুদিনা পাতা চাষাবাদ আগ্রহ বাড়ছে চন্দনাইশের কৃষকদের। পুদিনা চাষাবাদে কৃষকদের সহায়ক প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই মামলা হয়েছে, দাবি ইস্টার্ণ ব্যাংকের
পরবর্তী নিবন্ধকর্নেলহাটে চুলার আগুনে পুড়ল বসতঘরের ২৭ কক্ষ