প্রতিষ্ঠানের সামনে ফুটপাত রাস্তায় ময়লা পেলে জেল-জরিমানা

বাতিল হবে ট্রেড লাইসেন্স, প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে রাখতে হবে বিন । এনজিও, মার্কেট ও বাজারের প্রতিনিধিদের সাথে মেয়রের বৈঠক । হকার উচ্ছেদের দাবি ব্যবসায়ীদের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সামনে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্য ফেলার বিন রাখতে হবে বলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। কোনো প্রতিষ্ঠানের সামনে বিন ছাড়া রাস্তাফুটপাতে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা কোনো প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কাঁচাবাজার, কমিউনিটি সেন্টার, হোটেলরেস্তোরাঁ, হাসপাতাল ইত্যাদির আবর্জনা যত্রতত্র ফেললে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ জেলজরিমানা করা হবে বলেও ঘোষণা দেন। গতকাল রোববার টাইগারপাস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেট ও বাজারের প্রতিনিধিদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এ সময় মেয়র বলেন, নগরের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কর্পোরেশনের স্পেশাল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ৪১ ওয়ার্ডে অভিযান চালানো হবে। অভিযানে কারো বাসার সামনে ময়লা পাওয়া গেলে অথবা যত্রতত্র ময়লা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে সিটি কর্পোরেশন একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তবে শহরকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়তে নগরবাসীর সহায়তা প্রয়োজন। এ সময় নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিকদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হকার উচ্ছেদের দাবি ব্যবসায়ীদের : সভায় ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে ফুটপাত ও সড়ক দখল করা হকার ও দখলদারদের উচ্ছেদ করার দাবি জানান। তারা বলেন, বিভিন্ন মার্কেট এবং বাজারের সামনে অবৈধ হকার ও দখলদারদের কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাজারে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের দাবি জানান। খালনালা দখল করার ফলে নগরের বেশ কিছু বাজার ও মার্কেট বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় জানিয়ে তারা খালনালা অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবি জানান।

ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে শাহাদাত বলেন, অবৈধভাবে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার ফলে যানজট হয় এবং এসব ভাসমান হকারের ফেলা ময়লায় নগরীও অপরিচ্ছন্ন হয়। এছাড়া তাদের ফেলা ফলের খোসাসহ পিচ্ছিল জিনিসের জন্য মোটরসাইকেল আরোহীরা দুর্ঘটনার শিকার হন।

তিনি বলেন, ফুটপাত, সড়ক, নালাখাল অবৈধ দখলমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান চলবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকানের সামনে মালামাল রেখে ফুটপাত সংকীর্ণ বা বন্ধ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে পলিথিন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলবে। নির্মাণসামগ্রী রাস্তায় রেখে চলাচলের পথ সংকীর্ণ করলে মালামাল জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাইলিংয়ের মাটি নালায় ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সভায় এনজিও প্রতিনিধিরা জানান, চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিনিময়ে খাদ্যদ্রব্য প্রদানের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে একাধিক এনজিও। এছাড়া পাবলিক টয়লেট স্থাপনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতেও কাজ চলছে।

মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আর দুই মাস পরে বর্ষার মৌসুম। আমি চাচ্ছি নগরীর যে সমস্ত এনজিও জলাবদ্ধতা অথবা সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে তারা যৌথভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজ করুক। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগ এনজিওগুলোর সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন ও প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে কমেছে এলএনজি সরবরাহ
পরবর্তী নিবন্ধবিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২১ প্রার্থী