প্রতিশোধের পিটুনি, ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৫ জুলাই, ২০২৩ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে গত বছরের অক্টোবর মাসে নগরীর ৯ নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সুমনসহ বেশ কয়েকজন বাবলুকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে ভুড়ি বের করে ফেলে। এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলার ফাইনাল রিপোর্টও দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বাবলু সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন এবং গত রোববার সুমনকে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। গত ২ জুলাই নগরীর আকবরশাহ থানার পূর্ব ফিরোজশাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আকবরশাহ থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর জানান, সুমনের পক্ষে তার স্ত্রী বিবি হাজেরার করা মামলায় আসামিরা হলেন, মো. বাবলু (৪০), মো. মুন্না প্রকাশ কালাইয়া (২৭), গিয়াস উদ্দিন (২৫), সুমন (৪০), সাগর (২০), শাহ আলম (৩৮), কুদ্দুস (৪৫), লিপন রানা প্রকাশ রিপনসহ (২৬) অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আহত সুমন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের অনুসারী।

এদিকে সুমনকে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা হাফ শার্ট পরিহিত একজন মাটিতে পড়ে আছে আর জিন্স প্যান্ট পরিহিত একজন ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে পেটাচ্ছে। এক পর্যায়ে মার খেয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখনও থামছিল না আসামিরা।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, তার স্বামী পেশায় স্কেভেটর মিস্ত্রি। স্বল্প উপার্জন দ্বারা চট্টগ্রাম শহরে ভাড়া বাসায় থাকা সম্ভব না হওয়ায় তিনি স্বামীসন্তানসহ সরকারি দখলীয় ভূমিতে ৩ বছর পূর্বে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। বিবাদীগণ এলাকার বিভিন্ন লোকজনের কাছে সরকারি জায়গার দখল ক্রয়বিক্রয় করে এবং ভূমি জবর দখল দেয়। তার স্বামী বর্ণিত ঠিকানায় বাড়ি করার পর থেকে বিবাদীরা তাদের উচ্ছেদ করার জন্য ষড়যন্ত্রসহ চাঁদা দাবি করে। হুমকিধমকি প্রদান করার বিষয়ে আদালতে ফৌজদারি মামলা চলমান আছে। পরে বিবাদীরা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তার স্বামী মামলাটি প্রত্যাহারে অনীহা প্রকাশ করে বিবাদীদের এরূপ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়। তিনি নিজ বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ২ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আকবরশাহ থানাধীন পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনির ২ নং ঝিলপাড়ে বিবাদীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঠা নিয়ে তার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে তার স্বামীর মাথায় আঘাত করে। কিন্তু তিনি সরে যাওয়ায় তার মুখ ও ঠোঁট ফেটে যায়। বিবাদীদের আঘাতের ফলে তার স্বামীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। চিৎকার শুনে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। বিবাদীদের আঘাতের ফলে তার স্বামী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারা তাকে মৃত মনে করে ফেলে যায়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আকবর শাহ থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর আজাদীকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। নয় মাস আগে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী একটি সংঘর্ষে সুমনরা বাবলুর ভুড়ি ফেলে দেয়। সেই বাবলু মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে সুমনকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, উভয় ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইনের কাছে সবাই সমান। উভয় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাস্টমসের পুঁতে ফেলা নষ্ট পণ্য তুলে বিক্রি
পরবর্তী নিবন্ধকুমিল্লায় সাধারণ বন্দিদের সঙ্গেই পাপিয়া, থাকবেন বিশেষ নজরে