প্রতিবাদ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

মিয়ানমারে বড় সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা, রাত্রিকালীন কারফিউ

| বুধবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারে বড় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, রাত্রিকালীন কারফিউ জারি ও বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করা সত্ত্বেও সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী অহিংস পদক্ষেপ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বিরোধীরা। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশজুড়ে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হওয়ার পর সোমবার রাতে সামরিক জান্তা ওইসব বিধিনিষেধ আরোপ করে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গতকাল টানা চতুর্থ দিনের মতো রাজপথে নামে হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্ন শহরে সমবেত হয়ে সেনা শাসনের প্রতিবাদ জানান তারা। এক খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী নেপিদোতে বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে। জলকামানও ব্যবহার করা হয়। জলকামান অবশ্য এর আগের দিনও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিক্ষোভ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের মানবাধিকার রক্ষা বিষয়ক সংগঠন আগেই আর্জি জানিয়েছিল, ‘মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকের অধিকারকে মর্যাদা দিতেই হবে। সংযত থাকতে হবে সেনা-পুলিশকে। কোনও ভাবেই বলপ্রয়োগ করা যাবে না।’ অভিযোগ, কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই সোম ও মঙ্গলবার রাজধানী নেপিদোতে আন্দোলনকারীদের হটাতে জলকামান প্রয়োগ করে সেনা-সরকার। গতকাল আরও কয়েকটি শহরে জলকামান ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বাড়তে থাকা আইন অমান্য আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে হাসপাতাল, স্কুল ও সরকারি দপ্তরগুলোতে। গতকাল এক বিবৃতিতে তরুণ আন্দোলনকারী মং সাউংখা বলেছেন, ‘আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো।’ বিবৃতিতে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও ‘স্বৈরাচারের সম্পূর্ণ পতনের’ আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি যে সংবিধান পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীকে ভিটো দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে তা বিলুপ্ত করার এবং জাতিগতভাবে বিভক্ত মিয়ানমারে ফেডারেল ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। ’৮৮ প্রজন্ম গোষ্ঠী’ বলে পরিচিত আরেকদল প্রবীণ আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের আরও তিন সপ্তাহ ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে রক্তাক্তভাবে দমন করার জান্তা বিরোধী প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে এই গোষ্ঠীটি তৈরি হয়েছিল। গোষ্ঠির পক্ষ থেকে মিন কো নাইং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পুরো জাতির মধ্যে থাকা প্রতিবাদকারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ও একে অপরকে পদ্ধতিগতভাবে সহায়তা করার অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।’
মিয়ানমারজুড়ে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখানোর পর চার জনের বেশি একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানিয়েছে, দুটি বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়ে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন পেয়েছে তারা।
বড় ধরনের সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় চার জন চার জনের দল করে প্রতিবাদ চালিয়ে নেওয়া উচিত বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন অভ্যুত্থান বিরোধী কিছু আন্দোলনকারী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করছে নিউজিল্যান্ড
পরবর্তী নিবন্ধজিয়ার ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত