কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক শিক্ষানবীশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল ভারতে চিকিৎসকদের ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলছে। চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। আইএমএ জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার (আজ) সকাল ৬টা পর্যন্ত সব ধরনের ‘নন–ইমারজেন্সি মেডিকেল সার্ভিস’ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে শনিবার আউটডোর খোলেনি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আপদকালীন পরিষেবা ছায়া ২৪ ঘণ্টা সবরকম পরিষেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন চিকিৎসকরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডাকে চিঠি লিখে আইএমএ তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে। খবর বিডিনিউজের।
দাবিগুলো হল : ১৮৯৭ সালের মহামারী আইনে যে সংশোধনীগুলো ২০২৩ সালে আনা হয়েছিল, সেগুলোকে হাসপাতাল সুরক্ষা বিল, ২০১৯–এর সঙ্গে যুক্ত করে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। বিমানবন্দরের মত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে হাসপাতালে। চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং ভাঙচুরের ঘটনাতেও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার লিখেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কাজে যোগ দেবেন না তারা। একই চিত্র পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলোতেও।
মামলার তদন্তে অগ্রগতি : এদিকে আরজি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত একজন নারী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় নিহত চিকিৎসকের সঙ্গে কাজ করতেন, এমন কয়েক জনের নাম সিবিআইকে জানিয়েছেন তার বাবা–মা। তাদের সন্দেহ করার কারণও জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী কয়েকজনসহ এ ঘটনায় মোট ৩০ জনকে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। নিহত চিকিৎসকের (৩১) দেহের ময়নাতদন্তে চরম যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় ওই রাতে যৌনপল্লিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে আরজি করে ঢোকেন তিনি। তার পরেই নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ–খুনের ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্তের গতিবিধি যাচাই করে দেখছেন গোয়েন্দারা। কলকাতা পুলিশ জানায়, সে দিন রাত ১১টা নাগাদ আরজি করের সিসিটিভিতে অভিযুক্ত সঞ্জয়কে দেখা যায়। তখন তিনি হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। তারপর কিছু ক্ষণের মধ্যেই আবার বেরিয়ে যান। পরে আবার হাসপাতালে ফেরেন। জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হলের কাছে সিসি ক্যামেরায় তাকে ভোর ৪টার দিকে দেখা যায়। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর সেখান থেকে আবার বেরিয়ে যান তিনি।