প্রতিদিন ৩শ-৪শ লোকের আনন্দময় ইফতার

ওয়ালী বেগ খাঁ মসজিদ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১০ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

পুরনো ভবনে নয়, এবার নতুন ভবনেই রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন চলছে নগরীর চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ওয়ালী বেগ খাঁ মসজিদে। ৩৫০ বছর ধরেই পুরনো ভবনে ইফতার আয়োজন হয়ে আসছিল। এবারই প্রথম নতুন ভবনে এই আয়োজন করা হয়েছে। এতে বেশ খুশি আশেপাশের এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোজাদাররাও। মুরাদপুরের বাসিন্দা মো. ইকবাল আজাদীকে বলেন, চকবাজারে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জোহর, আসর, মাগরিব এবং এশার নামাজ আদায় করি ওয়ালী বেগ খাঁ মসজিদে। মাঝে মাঝে ইফতারটাও করে নিই এখানে। আসলে মসজিদে ইফতার করার আনন্দটা আলাদা। এর মধ্যে নতুন ভবনে বসে ইফতার করে আনন্দটা বেশি পাচ্ছি। মসজিদ কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনার মধ্যেই শেষ হয়েছে নতুন ভবনের নির্মাণ কার্যক্রম। তখন চাইলে নতুন ভবনে ইফতার আয়োজন করা যেত। কিন্তু করোনার জন্য তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে করোনা নেই। তাই নতুন ভবনের নিচ তলায় রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। অনেকে এ আয়োজনে সহযোগিতা করছেন। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ এ আয়োজনে শরিক হচ্ছেন।
মসজিদ কমিটির উপ অর্থ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, পুরনো ভবনের মূল অংশটি এখনো রয়েছে। প্রতি বছর (করোনা চলাকালীন বন্ধ ছিল) সেখানেই হত ইফতার আয়োজন। এবার আমরা সুযোগ পেয়ে (করোনা না থাকায়) নতুন ভবনের নিচ তলায় আয়োজন করেছি। প্রথম রোজা থেকে এটি চলছে। চলবে পুরো রমজান মাস। মসজিদ কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও এ আয়োজনে সহযোগিতা করছেন। যখন বেচে ছিলেন তখন তার বাবা মহিউদ্দিন চৌধুরীও আমাদের এ মসজিদের নানা প্রয়োজনে শরিক হতেন। তিনি বলেন, ইফতার শুরুর আগে প্রতিদিন মসজিদের হুজুররা রোজাদারদের উদ্দেশ্যে বয়ান দেন। সেখান থেকে রমজানের গুরুত্ব ও করণীয় সম্পর্কে নানা জ্ঞান আহরণ করা যায়।
ওয়ালী বেগ খাঁ মসজিদ ১৮ শতকে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। নগরীর চকবাজার এলাকাতেই এর অবস্থান। ৩৫০ বছরের পুরানো এবং মোগল আমলের ঐতিহ্য এটি। ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে নবাব ওয়ালী বেগ খাঁ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে মনে করা হয়। অনিন্দ্য সৌন্দর্যে সজ্জিত এ মুসলিম স্থাপনার (মূল ভবন) আসল সৌন্দর্য বাহির থেকে তেমনটা বোঝা যায় না। তবে ভেতরের অংশটা অনেক চমকপ্রদ। মূল মসজিদের দেয়ালগুলো অনেক পুরো। দেয়ালের পুরত্ব প্রায় ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত। দেয়ালের গায়ে রয়েছে ছোট ছোট খোপ। যেখানে পবিত্র কোরআন শরীফসহ বিভিন্ন জিনিস রাখা আছে। মসজিদের জন্য নির্ধারিত জায়গা প্রায় ১৮ শতক। তবে মূল মসজিদটি নির্মিত হয়েছে প্রায় ৬ থেকে ৭ শতক জায়গার উপর। মূল মসজিদের রয়েছে বিশাল বিশাল ৬টি গম্বুজ (চারটি বড় এবং দুইটি ছোট)। এই গম্বুজগুলোই মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। বলে রাখা ভাল যে, মূল মসজিদের পাশে থাকা অবশিষ্ট জায়গার উপর সম্প্রতি নির্মাণ করা হয়েছে নতুন ভবন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ৬ আগস্ট
পরবর্তী নিবন্ধথামছে না ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ