চট্টগ্রাম ওয়াসার কাগজে–কলমে প্রতিদিন উৎপাদিত পানির গড় পরিমাণ ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু দিন শেষে উৎপাদিত পানির ১৪ থেকে ১৫ কোটি লিটারের কোনো হদিস পাওয়া যায় না। এজন্য বছরে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার। চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি উৎপাদন হয়, তার প্রায় ৩০ শতাংশ ‘সিস্টেম লস’ (কারিগরি অপচয়) হিসেবে দেখানো হয়। ওয়াসার কাগজপত্রে প্রতিদিন গড় উৎপাদন ৫০ কোটি লিটার হলেও গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় ৩৫ থেকে ৩৬ কোটি লিটার। বাকি ১৪ থেকে ১৫ কোটি লিটার পানি নষ্ট হচ্ছে। মাস শেষে এই পানির বিল আসে না। এভাবে বছরে নষ্ট হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি লিটার পানি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ও রাজস্ব বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে এক হাজার লিটার পানি উৎপাদন করতে ওয়াসার খরচ হচ্ছে ৩১ টাকা। বছরে সাড়ে ৫ হাজার কোটি লিটার পানির উৎপাদন খরচ প্রায় প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই লোকসান চট্টগ্রাম ওয়াসার।
সমপ্রতি চট্টগ্রাম ওয়াসার একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রামবাসীর পানির চাহিদা ৫৬ কোটি লিটার। এতে চট্টগ্রাম ওয়াসার উৎপাদন সক্ষমতা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। আবাসিক এবং বাণিজ্যিক গ্রাহক সংযোগ রয়েছে ৯৮ হাজার।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকৌশলী বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার–১ ও ২ থেকে প্রতিদিন ১৪ কোটি লিটার করে ২৮ কোটি লিটার উৎপাদন হয়। অপরদিকে মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হয় ৯ কোটি লিটার এবং মোহরা পানি শোধনাগার থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হয় ৯ কোটি লিটার। এ ছাড়া গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হয় ৪ কোটি লিটার পানি। মোট ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হয়।
চট্টগ্রাম রাজস্ব বিভাগের থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি উৎপাদন হয়, তার প্রায় ২৯ থেকে ৩০ শতাংশ ‘সিস্টেম লস’ হিসেবে দেখানো হয়। অর্থাৎ কাগজে–কলমে প্রতিদিন ওয়াসার গড় উৎপাদন ৫০ কোটি লিটার হলেও গ্রাহকের কাছে পৌঁছেমাত্র ৩৫–৩৬ কোটি লিটার। বাকি ১৪–১৫ কোটি লিটার নষ্ট হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব ও বাণিজ্যিক বিভাগের তথ্য মতে, বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক সংযোগ ৮৩ হাজার ৭৫৪টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৬ হাজার ৩০৪টি।
ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের দৈনিক পানির উৎপাদন এখন ৪৫ থেকে ৫০ কোটি লিটার। তবে নগরীর চাহিদা ৫৫ কোটি লিটার। কিন্তু উৎপাদিত পানির ২৯ থেকে ৩০ ভাগ (১৪ থেকে ১৫ কোটি লিটার পানি) গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় না। এসব পানি সিস্টেম লস বা কারিগরি অপচয় হিসাবে দেখানো হয়।