প্রতিদিন পুঁতে ফেলা হবে ১৫-২০ কন্টেনার পণ্য

৭৩ কন্টেনার পচা পণ্য ধ্বংস করবে কাস্টমস

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:২১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ইয়ার্ড দখল করে রাখা পচা পণ্য ভর্তি কন্টেনারগুলো সরিয়ে নেয়ার তাগাদা দেয়া হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে এই ধরনের কন্টেনারগুলো সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। আমদানি করে খালাস না করায় নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো ক্রমান্বয়ে নষ্ট করে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কন্টেনার পণ্য নষ্ট করা হয়েছে। আরো তিন শতাধিক কন্টেনার পণ্য নষ্ট করা হবে। তবে আজ থেকে ৭৩টি কন্টেনার পচা পণ্য হালিশহরে মাটিতে পুঁতে কন্টেনারগুলো খালি করার অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ কন্টেনার পণ্য মাটিতে পোঁতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জানা যায়, কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার
বিনিময়ে আমদানিকৃত অনেক পণ্য আমদানিকারকরা খালাস করেন না। নানা গোঁজামিল ধরা পড়ার পর অনেক আমদানিকারক গা ঢাকা দেন। অনেক সময় আমদানিকৃত পণ্যের বাজার দর কমে গেলেও সটকে পড়েন তারা। এই ধরনের পণ্যগুলো বন্দরের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে। বন্দরের ইয়ার্ড দখল করে পড়ে থাকা এই ধরনের কয়েকশ কন্টেনার বন্দর কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। এসব কন্টেনার নিলাম অনুষ্ঠান বা পণ্য ধ্বংসের মাধ্যমে ইয়ার্ড ফাঁকা করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ কাস্টমসকে অনুরোধ করে আসছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নানা আইনি জটিলতায় অনেক সময় নিলাম অনুষ্ঠান কিংবা পণ্য ধ্বংস করতে পারে না। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চাইলে একটি পণ্য ধ্বংস বা কন্টেনার নিলাম করতে পারে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন নিতে হয়। সমন্বয় করতে হয় পরিবেশ, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে। এছাড়া কোনো চালানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকলে কাস্টমস বা এনবিআর সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নানা প্রতিকূলতায় সৃষ্ট দীর্ঘসূত্রতায় আমদানিকৃত নিলামযোগ্য অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। পচনশীল নানা পণ্য পচে বন্দরের অভ্যন্তরে দুর্গন্ধও ছড়ায়।
বন্দরের অভ্যন্তরে বর্তমানে যেসব কন্টেনার রয়েছে তার মধ্যে পচা পণ্য বোঝাই ৭৩ কন্টেনার পণ্য ধ্বংস করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারি করা স্থায়ী আদেশ অনুযায়ী গঠিত চট্টগ্রাম বন্দরের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ধ্বংস কমিটির গত ২৫ অক্টোবরের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব পণ্য ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১৫ লটের এসব কন্টেনারের মধ্যে বন্দরের ইয়ার্ডে ১৫টি এবং বিভিন্ন অফডকে রয়েছে ৬১টি। কন্টেনারগুলোতে আদা, সুপারি, খেজুর, জুস, মাছের খাদ্য, মাছসহ নানা ধরনের পচনশীল পণ্য রয়েছে।
আজ থেকে এসব পণ্য হালিশহরে ধ্বংস করে কন্টেনারগুলো খালি করা হবে। হালিশহরের আনন্দবাজারে অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং স্টেশনের পাশে পণ্যগুলো মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় করে এসব পণ্য ধ্বংসের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছে কাস্টমস।
আজ থেকে প্রতিদিন আনন্দবাজারে ১৫ থেকে ২০ কন্টেনার পণ্য ধ্বংস করা হবে। পর্যায়ক্রমে তালিকাভুক্ত সব কন্টেনার পরিবেশসম্মত উপায়ে ধ্বংসের পরিকল্পনা রয়েছে কাস্টমসের। চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, পচা পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রেখেছিল। কাস্টমসের এই উদ্যোগ বন্দরের কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুঁতে ফেলা পণ্য শেষ পর্যন্ত মাটির নিচে থাকবে?
পরবর্তী নিবন্ধদেশের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ